বৃহস্পতিবার, ২রা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১৯শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
আজ বৃহস্পতিবার | ২রা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

ষড়যন্ত্র ও অপপ্রচারে বানচাল হতে পারে মহানগর বিএনপির সম্মেলন

মঙ্গলবার, ২৭ জুন ২০২৩ | ১২:২২ পূর্বাহ্ণ

ষড়যন্ত্র ও অপপ্রচারে বানচাল হতে পারে মহানগর বিএনপির সম্মেলন

আগামী জুলাই মাসেই অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে বহু প্রতিক্ষিত নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির দ্বি- বার্ষিক সম্মেলন। এর ফলে দীর্ঘ ৩১ বছর পর সম্মেলনের মাধ্যমে নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির নেতৃত্ব নির্বাচিত হতে চলেছে।

এদিকে নারায়ণগঞ্জ মহানগর প্রথম সম্মেলনকে ঘিরে বিএনপি ও অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের মধ্যে উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করছে। পাশাপাশি নেতাকর্মীদের মনে শঙ্কাও বিরাজ করছে।

যদি প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো ধরনের বঁাধা না থাকলে নগরীর যেকোনো একটি কমিউনিটি সেন্টারে সম্মেলন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। তবে মহানগর বিএনপির পক্ষ থেকে এখনও পর্যন্ত সম্মেলনের তারিখ কিংবা ভেন্যু নির্ধারণ করা হয়নি।

জানাগেছে, ২০২২ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর এড. সাখাওয়াত হোসেন খান ও এড. আবু আল ইউসুফ খান টিপুকে সদস্য সচিব করে নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির ৪১ সদস্য বিশিষ্ট আহ্বায়ক কমিটি অনুমোদন করা হয়।

এরপর বিএনপির বহিষ্কৃত নেতা এড. তৈমূর আলম খন্দকারের অনুসারীদের মধ্যে কমিটি ঘোষণার পর পরই দেখা দেয় বিদ্রোহ। আহ্বায়ক কমিটি থেকে পদত্যাগ করেন ১৪ নেতা।

পরে তারা সাখাওয়াত-টিপু’র বিরুদ্ধে চালায় নানান ধরনের ষড়যন্ত্র ও দিতে থাকেন মনগড়া নানা বক্তব্য। পরবর্তীতে পদত্যাগকারী আতাউর রহমান মুকুল ও হাজী নুরুদ্দিনের পদত্যাগপত্র কেন্দ্রে গৃহীত হয়।

এমনকি সাখাওয়াত-টিপুকে চ্যালেঞ্জ করে আলাদা ভাবে দলীয় কর্মসূচি পালন করতে থাকেন তারা।
এদিকে বিদ্রোহী গ্রুপের সকল ষড়যন্ত্রকে মোকাবেলা করে রাজপথে একের পর এক দলীয় কর্মসূচি নেতাকর্মীদের নিয়ে সফল ভাবে পালন করেছে সাখাওয়াত-টিপু।

শুধু তাই নয় মহানগর বিএনপির ইতিহাসে এই প্রথম সম্মেলনর মাধ্যমে সাখাওয়াত-টিপু মহানগর বিএনপির আওতাধীন সব গুলো ওয়ার্ড, ইউনিয়ন ও থানা এবং উপজেলা বিএনপি’র কমিটি গঠন করেছে।

এখন আবার নতুন করে মহানগর বিএনপির সম্মেলনকে বানচাল করতে একটি গ্রুপ ষড়যন্ত্র চালাচ্ছে। সদস্য সচিব এড. আবু আল ইউসুফ খান টিপুকে জড়িয়ে বিএনএফ নামের একটি ভুঁইফোড় সংগঠনের নামে অপপ্রচার চালাচ্ছে। যদিও এসকল বিষয়কে পাত্তাই দিচ্ছে না টিপু। কিন্তু এই বিএনএফ বলে যে অপপ্রচার চালাচ্ছে যার কোন ভিত্তি ও সত্যতা নেই।

কেউ কেউ বিএনএফ নামের একটি ভুঁইফোড় সংগঠনের অপপ্রচার চালিয়ে ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করার অপচেষ্টা চালাচ্ছে। শুধুমাত্র নেতাকর্মীদের বিভ্রান্ত করার জন্য এই অপপ্রচার চালাচ্ছে। সাখাওয়াত- টিপু’র সাথে সাংগঠনিকভাবে প্রতিযোগিতা করতে না পেরে রাজনৈতিক ভাবে ঈর্ষান্বিত হয়ে প্রতিহিংসামূলক এই ষড়যন্ত্র চালানো হচ্ছে। যা আজও সত্য নয়।

এখন মহানগর বিএনপির সম্মেলনের মধ্য দিয়েই সাখাওয়াত-টিপু নতুন ইতিহাস তৈরি করতে যাচ্ছে। এটি যেন তাদের কাল হয়ে দঁাড়িয়েছে। এর কারণেই তাদের বিরুদ্ধে অপপ্রচার ও ষড়যন্ত্র চালানো হচ্ছে। আর সম্মেলনের সফল সমাপ্তির মধ্যে দিয়েই সকল অপপ্রচার ও ষড়যন্ত্রের পরিসমাপ্তি ঘটবে এমনটাই জানাগেছে।

ইতিমধ্যে নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এড. সাখাওয়াত হোসেন খান ও সদস্য সচিব এড. আবু আল ইউসুফ খানের নেতৃত্বে মহানগর বিএনপির ইতিহাসে এই প্রথম সম্পূর্ণ গনতান্ত্রিক পদ্ধতিতে ভোটাভুটি ও সম্মেলনের মাধ্যমে বন্দর থানা, বন্দর উপজেলা, নারায়ণগঞ্জ সদর থানা, বিভিন্ন ইউনিয়ন ও ওয়ার্ডের প্রত্যেকটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। এখন মহানগর বিএনপির সম্মেলনের মধ্য দিয়েই কাউন্সিলরা বাছাই করে নিবেন তাদের আগামী দিনের নেতৃত্ব।

দলীয় সূত্রে জানা যায়, ঈদের পর আগামী ৮ জুলাই কিংবা ১৫ জুলাই মধ্যেই সম্ভাব্য সম্মেলনের তারিখ নির্ধারণ করবে দলটির নেতারা। মহানগর বিএনপির পক্ষ থেকে সম্মেলনের অনুমতি চেয়ে প্রশাসনের কাছে লিখিতভাবে আবেদন করা হবে। অনুমতি পেলেই দলীয় হাইকমান্ডের সাথে আলোচনা করেই সম্মেলনের চূড়ান্ত তারিখ নির্ধারণ করা হবে।

এরপর সম্মেলনকে সফল করার লক্ষ্যে গঠন করা হবে বিভিন্ন উপ- কমিটি। গঠন করা হবে মহানগর বিএনপির সম্মেলনের জন্য নির্বাচন কমিশন । এরপর তফসিল ঘোষণা করা হলে সে তফসিল অনুযায়ী হবে সম্মেলন।

দলীয় সূত্রে আরও জানা যায়, মহানগর বিএনপির দ্বি- বার্ষিক সম্মেলনে শুধুমাত্র সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। সম্মেলনে ৩০৩ জন কাউন্সিলর ভোট দিয়ে মহানগর বিএনপির আগামীর নেতৃত্ব নির্বাচিত করবেন।

নারায়ণগঞ্জ সদর থানা বিএনপির ১০১ জন, বন্দর থানা বিএনপির ১০১ জন ও বন্দর উপজেলা বিএনপির ১০১ জন সদস্য এতে ভোট দেবেন। মহানগর বিএনপির কমিটির এটি প্রথম সম্মেলন। মূলত এটি আগে শহর বা পৌর বিএনপি এবং সর্বশেষ নগর হিসেবে পরিচিত ছিল।

মহানগর বিএনপির সম্মেলনের কেন্দ্রীয় বিএনপি নেতা, মহানগর বিএনপির কেন্দ্রে পদায়ন হওয়া নেতা এবং মহানগর বিএনপির অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতারা ডেলিগেট হিসাবে উপস্থিত থাকবেন। এছাড়াও বিভিন্ন শ্রেণি পেশার ও রাজনৈতিক দলের নেতাদের সম্মেলনে অতিথি হিসেবে আমন্ত্রণ জানানো হতে পারে।

এবিষয়ে নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এড. সাখাওয়াত হোসেন খান বলেন, ঈদের পর নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির সম্মেলনের সকল প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। তবে সম্মেলনের চূড়ান্ত তারিখ এখনও নির্ধারন করা হয়নি। ঈদের পরপরই হাইকমান্ডের সাথে আলোচনা করে চূড়ান্ত তারিখ নির্ধারণ করা হবে।

তিনি আরও বলেন, দীর্ঘ ৩১বছর পর হতে চলেছে মহানগর বিএনপির দ্বি-বার্ষিক সম্মেলন। সম্মেলনকে স্মরনীয় করে রাখতে সব ধরনের প্রস্তুতি চলছে। মহানগর বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের নিয়ে উৎসব মুখর ভাবে আমরা সম্মেলনটির আয়োজন করবো যা নারায়ণগঞ্জে একটি ইতিহাস হয়ে থাকবে।

মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব এড. আবু আল ইউসুফ খান টিপু বলেন, আমাদের রাজনৈতিক অভিভাবক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশে আমরা সকল ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করে মহানগর বিএনপির আওতাধীন সব গুলো ওয়ার্ড, ইউনিয়ন ও থানা উপজেলায় সম্মেলনের মাধ্যমে নেতৃত্ব নির্বাচিত করতে পেরেছি। এখন মহানগরের আগামী দিনের নেতৃত্ব নেতাকর্মীরা নির্বাচিত করবে।

তিনি আরও বলেন, ঈদের পর জুলাই মাসেই মহানগর বিএনপির সম্মেলনের আয়োজন করা হবে। আমরা প্রশাসনের কাছে অনুমতি চেয়ে লিখিতভাবে আবেদন করবো। আর হাইকমান্ডের সাথে আলোচনা করে চূড়ান্ত তারিখ নির্ধারণ করবো। আশাকরি উৎসব মুখর পরিবেশের মধ্যেদিয়ে মহানগর বিএনপির সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে।

প্রসঙ্গত, ১৯৯২ সালে শহরের চাষাঢ়া জিয়া হলে সর্বশেষ সম্মেলনের মাধ্যমে শহর বা পৌর বিএনপির নেতৃত্ব নির্বাচিত হয়েছিল। সে সময়ে সাবেক সংসদ সদস্য এড. আবুল কালাম সভাপতি ও নাজির প্রধান সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছিলেন।

এরপর ২০০৩ সালে আবুল কালামকে আহ্বায়ক ও রফিক কমিশনারকে সদস্য সচিব করা হয়েছিল। পরবর্তীতে ২০০৯ সালে শহর বিএনপির জেলা বিএনপির অধীনে কমিটি গঠন করা হয়েছিল।

পরে ২০১৭ সালে সাবেক এমপি এড. আবুল কালামকে সভাপতি ও এটিএম কামালকে সাধারণ সম্পাদক করে কমিটি গঠন করা হয়।




সর্বশেষ  
জনপ্রিয়  

ফেসবুকে যুক্ত থাকুন