মঙ্গলবার, ৩০শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১৭ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
আজ মঙ্গলবার | ৩০শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

ভোটারদের টাকা দিতে বাঁধা দেওয়ার ছুরিকাঘাতে চেয়ারম্যান সমর্থককে হত্যা।

শুক্রবার, ১২ এপ্রিল ২০২৪ | ১:২১ অপরাহ্ণ

ভোটারদের টাকা দিতে বাঁধা দেওয়ার ছুরিকাঘাতে চেয়ারম্যান সমর্থককে হত্যা।

বরগুনা প্রতিনিধিঃ

বরগুনা আমতলীতে ভোটারদের টাকা দিতে বাঁধা দেয়ার চেয়ারম্যান প্রার্থী মোতাহার উদ্দিন মৃধার সমর্থক হিরন গাজীকে (৫০) ছুরিকাঘাতে অপর চেয়ারম্যান প্রার্থী আবুল বাশার নয়ন মৃধার সমর্থক ইউসুফ মাতুব্বর, কাদের সরদার ও শহীদ মালাকার হত্যা করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। প্রত্যক্ষদর্শী মেতাহার মৃধার সমর্থক মিলন সরদার ও দেলোয়ার সরদার এমন অভিযোগ করেন। পুলিশ নিহত হিরন গাজীর মরদেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য বরগুনা মর্গে প্রেরন করেছে। ঘটনা ঘটেছে আমতলী উপজেলার আমতলী সদর ইউনিয়নের পুর্ব মহিষডাঙ্গা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পশ্চিম পাশে অনিল সাজ্জাল বাড়ীর সামনে বুধবার রাত সাড়ে ১১ টার দিকে।

জানাগেছে, আগামী ২৮ এপ্রিল আমতলী সদর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন। এ নির্বাচনে ৯ জন চেয়ারম্যান প্রার্থী প্রতিদ্বন্ধিতা করছেন। অভিযোগ রয়েছে দুই চেয়ারম্যান প্রার্থী মোতাহার উদ্দিন মৃধা ও আবুল বাশার নয়ন মৃধা ভোটারদের টাকা বিতরন করছেন । বুধবার রাত ১১ টার দিকে আবুল বাশার নয়ন মৃধার সমর্থক ইউসুফ, কাদের সরদার ও শহীদ মালাকারসহ ৪০-৪৫ জন পুর্ব মহিষডাঙ্গা গ্রামে ভোটারদের টাকা দিচ্ছিল। এ সময় মোতাহার মৃধার সমর্থক হিরন গাজীসহ ১০-১২ জনে টাকা দিতে বাঁধা দেয়। এতে ক্ষিপ্ত হয় নয়ন মৃধার সমর্থকরা। এক পর্যায় আবুল বাশার নয়ন মৃধার সমর্থক ইউসুফ মাতুব্বর, কাদের সরদার ও শহীদ মালাকারসহ ৬-৭ জন তাকে ছুিরকাঘাত করে। ওই ছুরিকাঘাতে তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে গুরুতর জখম হয়। তাৎক্ষনিক হিরনের সহযোগী মিলন সরদার, ও দেলোয়ার সরদারসহ ১০/১২ জনে রক্তাক্ত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসে। ওই হাসপাতালের চিকিৎসক ডাঃ কাঙ্খিতা মন্ডল তৃণা তাকে মৃত্যু ঘোষনা করেন। ওই রাতেই পুলিশ তার মরদেহ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়। বৃহস্পতিবার সকালে তার মরদেহ ময়না তদন্তের জন্য বরগুনা মর্গে প্রেরন করেছে। এ ঘটনায় মামলা প্রক্রিয়াধীন। বৃহস্পতিবার দুপুরে বরগুনা পুলিশ সুপার আব্দুস ছালাম পিপিএম, সহকারী পুলিশ সুপার রুহল আমিন ও ওসি কাজী সাখাওয়াত হোসেন তপু ঘটনাস্থল পরিদর্শণ করেছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন বলেন, পুর্ব শত্রুতার জের ধরে নির্বাচনকে কাজে লাগিয়ে আবুল সরদারের ছেলে কাদের সরদার ও তার লোকজন হিরনকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করেছে।

প্রত্যক্ষদর্শী মিলন সরদার ও দেলোয়ার সরদার “বিডিটাইমস২৪”কে বলেন, আবুল বাশার নয়ন মৃধার সমর্থকরা গ্রামে টাকা বিতরন করতেছিল। এতে মোতাহার মৃধার সমর্থক হিরন গাজীসহ ১০-১২ জনে বাঁধা দেয়। এক পর্যায় ক্ষিপ্ত হয়ে নয়ন মৃধার সমর্থক শহীদ মালাকার, ইউসুফ মাতুব্বর ও কাদের সরদারসহ ৬/৭ জনে তাকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করেছে। আমরা তাকে রক্ষা করতে এগিয়ে গেলে আমাদেরকেও তারা ধাওয়া করেছে।

নিহত হিরন গাজীর স্ত্রী তাসলিমা বেগম বলেন, মোর কিছুই রইলো না। ওরা মোর স্বামীরে মাইর‌্যা হালাইছে। মুই এ্যাইয়ার বিচার চাই।

চেয়ারম্যান প্রার্থী মোতাহার উদ্দিন মৃধা বলেন, আবুল বাশার নয়ন মৃধার নেতৃত্বে তার ভাই পান্নু মৃধা ও আজাদসহ ৪০-৫০ জন গ্রামে ঢুকে টাকা বিতরন করছিল। ওই সময় আমার লোকজন ঘোড়া ঘোড়া বলে ডাক চিৎকার দেয়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে আমার সমর্থক হিরন গাজীকে পিটিয়ে ও ছুরিকাঘাতে হত্যা করেছে। আমি এ হত্যাকান্ডের বিচার দাবী করছি।

অপর চেয়ারম্যান প্রার্থী আবুল বাশার নয়ন মৃধা সকল অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমি গতকাল আমার ব্যবসার কাজে বাসায় সিসি ক্যামেরার আওতায় ছিলাম। মোতাহার মৃধা ও তার লোকজন দিয়েই হিরনকে হত্যা করে পরিকল্পিতভাবে আমার উপর দায় চাপাচ্ছেন। আমি এ হত্যাকান্ডের বিচার দাবী করছি।

আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ চিন্ময় হাওলাদার বলেন, হাসপাতালে আনার পুর্বেই ছুরিকাঘাতে আহত হিরন নামের একজন মারা গেছে।

আমতলী থানার ওসি কাজী সাখাওয়াত হোসেন তপু বলেন, ভোটারদের টাকা দেওয়াকে কেন্দ্র করে দুই চেয়ারম্যান প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায় হিরন গাজী নামের একজনকে ছুরিকাঘাত করে। হাসপাতালে আনার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত্যু ঘোষনা করেছেন। এ ঘটনায় থানায় মামলা প্রক্রিয়াধীন আছে। তিনি আরো বলেন, ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেপ্তার চেষ্টা অব্যাহত আছে।




সর্বশেষ  
জনপ্রিয়  

ফেসবুকে যুক্ত থাকুন