নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
ফেনী জেলার দাগনভূঞায় এক প্রবাসীর স্ত্রীকে বিয়ের প্রলোভনে জোরপূর্বক ধর্ষনের অভিযোগ ওঠেছে পৌরসভার ৯ নং ওয়কর্ডের সাবেক কাউন্সিলর মহি উদ্দিন জুয়েলের ছোট ভাই আহমেদ হিমেলের বিরুদ্ধে। হিমেল বিয়ের অস্বীকৃতি জানালে ৩ বার আত্মহত্যার চেষ্টা করেন ওই মহিলা। এ বিষয়ে ভূক্তভোগী ওই নারী তার ব্যক্তিগত ফেসবুকে কয়েকটি ভিডিও আপলোড করেন।
আপলোড করা ভিডিওতে ঐ নারী অভিযোগ করে বলেন, তার স্বামী প্রবাসে থাকার সুবাদে দাগনভূঞা ফাজিলেরঘাট রোডস্থ হিমেলের ফার্মেসীর পাশে একটি ভাড়া বাসায় ওঠেন। ওই মহিলার স্বামী ইকবালের সাথে হিমেলের সু-সম্পর্ক থাকায় প্রবাসে যাওয়ার পর ইকবাল তার স্ত্রীর জন্য হিমেলের কাছে টাকা পয়সা প্রেরন করতেন। সে সুবাদে ইকবালের স্ত্রীর সাথে সখ্যতা গড়ে ওঠে হিমেলের। ভাড়া বাসায় ইকবালের স্ত্রী একা থাকার সুবাদে সে সুযোগটি কাজে লাগায় হিমেল। ইকবাল প্রবাসে যাওয়ার ৪-৫ মাসের মধ্যে তার স্ত্রীকে প্রথমে জোরপূর্বক ধর্ষন করে হিমেল। এ নিয়ে ওই মহিলা বাড়াবাড়ি করলে হিমেল তাকে বিয়ে করার প্রতিশ্রুতি দেয়। এবং নাকফুল পরিয়ে দেয়। প্রায় তিনবছর ধরে ওই মহিলার সাথে শারিরিক সম্পর্ক করে আসতেছে হিমেল। নিয়মিত শারিরিক সম্পর্কের কারনে ওই মহিলা ২ বার বাচ্চা কনসিভ করলেও হিমেল তাকে প্রেসার দিয়ে বাচ্চা নষ্ট করতে বাধ্য করে। কিন্তু হিমেলকে বারবার বিয়ের কথা বললেও হিমেল তা এড়িয়ে চলতে থাকে। এবং গত মাসে তাকে বিয়ে করবেনা মর্মে জানিয়ে দেয় হিমেল। এবং এ ঘটনা কারো সাথে বললে বা মামলা করার চেষ্টা করলে তাকে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দেয় হিমেল ও জুয়েল। তাই সে নিরুপায় হয়ে অতিরিক্ত ঘুমের ওষুধ সেবন করে আত্মহত্যার চেষ্টা করলে হিমেলের ভাই জুয়েল তাকে হসপিটালে নিয়ে ভর্তি করেন। গত মাসে ৩ বার সে আত্মহত্যার চেষ্টা করে। সর্বশেষ জুনের ৩০ তারিখ গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করলে দরজা ভেঙে ঝুলন্ত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেন হিমেলের ভাই সাবেক কমিশনার মহিউদ্দিন জুয়েল। ভূক্তভোগী ওই মহিলা হসপিটালে থাকালীন জুয়েল তার ভাই হিমেলকে অন্যত্র পাঠিয়ে দেয়। ওই মহিলা হসপিটাল থেকে বাসায় ফিরে তার সাথে ঘটে যাওয়া অন্যায়ের বিবরণ তুলে ধরে তার ফেসবুকে কয়েকটি ভিডিও আপলোড করেন। তখন এ ঘটনার ধামাচাপা দিতে দাগনভূঞা পৌরসভার মেয়র ওমর ফারুক খাঁনের শরাণাপন্ন হয় জুয়েল। মেয়র তখন মেয়েদের এলাকার জায়লস্কর ইউনিয়নের ইউপি সদস্য আব্দুল হাকিমের সাথে যোগসাজশে ২ তারিখ মঙ্গলবার সকালে ওই নারীকে জোরপূর্বক তার বাসা থেকে অন্যত্র নিয়ে পাঠিয়ে দেয়। সে থেকে অদ্যবদি পর্যন্ত ওই মহিলার কোন খোঁজ মিলছেনা মর্মে অভিযোগ করেন ওই মহিলার স্বামীর ছোট ভাই। তার ভাই প্রবাসে থাকার সুবাদে হিমেল তার ভাবির সাথে যে ব্যবিচার করেছে তার বিচার দাবী ও তার ভাবির খোঁজ পেতে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
এ বিষয়ে স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. ফারুক জানান, ভূক্তভোগী ওই নারী আমার কাছে কিছুদিন পূর্বে এসেছেন। এবং হিমেল জোরপূর্বক তাকে ধর্ষন করেছে মর্মে আমাকে জানালে আমি হিমেলের বড় ভাই সাবেক কাউন্সিলর জুয়েলকে অবহিত করি৷ এরপর জুয়েল কি করছে তা আমাকে জানায়নি। গত ৩০ জুন রাত ৩ টার দিকে জুয়েল আমাকে কল করে জানায় ওই মহিলা গলায় ফাঁস দিছে আমি ওর বাসায় যাওয়ার জন্য। কিন্তু এতরাতে আমি যাইনি। কিন্তু আমি জুয়েলকে বলেছি দরজা ভেঙে আগে মহিলাকে উদ্ধার করার জন্য। তারা মহিলাকে ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতাল নিয়ে যায়। পরে মেয়র আমাকে কল করে জানান এবিষয়টি তিনি (মেয়র) দেখবেন। এরপর আর আমি এ বিষয়ে অবগত নই।
এ ব্যাপারে সাবেক কমিশনার জুয়েল জানান তাদের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ সত্য নয়। যে মহিলা ফেসবুকে এসে লাইভ করে অভিযোগ তুলেছেন। পরবর্তীতে তিনি তা আবার ডিলিট করে দিয়েছেন এছাড়াও তিনি অন্য কোথাও কোন অভিযোগ করেননি।
এ বিষয়ে দাগনভূঞা পৌরসভার মেয়র ওমর ফারুক খাঁনের মোবাইলে কল দিলে তা বন্ধ পাওয়া যায়।
দাগনভূঞা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আবুল হাশিম জানান, তিনি কোন অভিযোগ পাননি।