মঙ্গলবার, ৩০শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১৭ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
আজ মঙ্গলবার | ৩০শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

সোনারগাঁয়ে উপজেলা নির্বাচনকে কেন্দ্র করে নেতাকর্মী বেচা-কেনার হিড়িক

বুধবার, ১৭ এপ্রিল ২০২৪ | ৩:৩০ পূর্বাহ্ণ

সোনারগাঁয়ে উপজেলা নির্বাচনকে কেন্দ্র করে নেতাকর্মী বেচা-কেনার হিড়িক

সোলায়মান হাসান (নারায়ণগঞ্জ) :
আসন্ন সোনারগাঁ উপজেলা নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সোনারগাঁ উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের নেতাকর্মী বেঁচাকেনার হিড়িক পড়েছে। নগদ টাকা থেকে শুরু করে জামা কাপড়সহ নিচ্ছেন। নেতাকর্মীদের বেঁচা কেনার হিড়িকে এতে বিপদে পড়েছেন সৎ নিষ্ঠাবান প্রার্থীরা। বেঁচা কেনার হিড়িকে শুরু আওয়ামীলীগ নয় রয়েছেন অনেক বিএনপি নেতারাও। যা নিয়ে কয়েকদিন আগে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। জানাগেছে, আগামী ২১ মে অনুষ্ঠিত হবে সোনারগাঁ উপজেলা নির্বাচন। এই নির্বাচনে একাধিক চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান রয়েছেন। এদের মধ্যে চেয়ারম্যান প্রার্থী হলেন বর্তমান চেয়ারম্যান এডভোকেট সামসুল ইসলাম ভূইয়া, ভাইস চেয়ারম্যান বাবুল ওমর, সাবেক ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মাহফুজুর রহমান কালাম, উপজেলা যুবলীগের সভাপতি রফিকুল ইসলাম নান্নু, সাধারণ সম্পাদক আলী হায়দার। পুরুষ ভাইস চেয়ারম্যান পদে রয়েছেন, সোনারগাঁ উপজেলা সাংস্কৃতির জোটের সাবেক সভাপতি আজিজুল ইসলাম মুকুল, সোনারগাঁ প্লোটি সমিতির সভাপতি জহিরুল ইসলাম, সোনারগাঁ উপজেলা যুবলীগের সহ-সভাপতি মাসুম চৌধুরী, সাবেক উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান এম এ জাহাঙ্গীর, কাঁচপুর ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি মাহবুব পারভেজ, সোনারগাঁ শেখ রাসেল কিশোর পরিষদের সভাপতি ফয়েজ আহম্মেদ শিপন, শেখ ফরিদ। মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে রয়েছে বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান মাহমুদা আক্তার ফেন্সী, সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান কোহিনুর ইসলাম রুমা, নারায়ণগঞ্জ জেলা পরিষদের সাবেক সদস্য এডভোকেট নুরজাহান, শ্যামলী আক্তার।

সুত্র জানায়, গত সংসদ নির্বাচনে পর উপজেলা নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি নিতে থাকেন উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী, ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা চেয়ারম্যানরা। নির্বাচনে প্রস্তুতি নেয়ার পর থেকেই তারা উপজেলার বিভিন্ন নেতা ও তৃনমুল কর্মীদের সাথে যোগাযোগ শুরু করেন। এরই ধারাবাহিকতায় প্রার্থীদের সুযোগ বুঝে সবার সাথে রিয়াজো ম্যান্টেন করা শুরু করেন নেতাকর্মীরা। এ সুযোগ মোতাবেক সকল প্রার্থীর নির্বাচন করবেন বলে প্রতিশ্রুতি দিতে থাকেন তারা। তারই সুযোগ বুঝে অনেক নেতা ও কর্মীরা বিভিন্ন প্রার্থীর কাছ থেকে বিভিন্ন খরচ দেখিয়ে অর্থ আদায় করতে শুরু করেন। বাধ্য হয়ে প্রার্থীরাও নির্বাচনের স্বার্থে তাদের কম বেশী অর্থ দিতে থাকেন। এভাবে কিছু নেতাকর্মী গত ঈদুল ফেতরকে সামনে রেখে চেয়ারম্যান প্রার্থী, ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যানের কাছ থেকে ১ থেকে ২ লাখ টাকা পর্যন্ত বকসিস হিসেবে নিয়েছেন অনেকে আবার কর্মীদের বকসিসের সাথে কর্মীদের জন্য ২শ ৩শ পাজ্ঞাবীও উপহার নিয়েছেন। সে ক্ষেত্রে বিভিন্ন মেম্বাররা উৎকোচন নিয়েছেন বেশী। প্রার্থীদের কাছে থেকে বকসিস ও উৎকোচনের বিষয়টি সারা সোনারগাঁয়ে ছড়িয়ে পড়েছেন। এতে ত্যাগী তৃনমুল নেতাদের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে পুরুষ ভাইস চেয়ারম্যানরা জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশে একটি অবাধ নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে ও তৃনমুল থেকে ত্যাগী ও জনপ্রিয় নেতাদের নির্বাচিত করে চেয়ারম্যান পদে বসাতে দলীয় প্রতিক তুলে দিয়েছেন। যাতে জনগন তাদের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিয়ে জনগনের সেবায় এগিয়ে আসতে পারে কিন্তু নির্বাচনে যে ভাবে কালো টাকার ছড়াছড়ি চলছে এতে ভালো ত্যাগী নেতারা কোন ঠাসা হয়ে পড়েছে। কালো টাকার কারণে চাঁদাবাজ সন্ত্রাসীরা টাকার মাধ্যমে ভোটাদের প্রভাবিত করে নির্বাচিত হয়ে যেতে পারে। এতে তৃনমুল নেতাকর্মীরা নির্বাচিত হতে পারবে না ফলে শেখ হাসিনার সাফলতা ব্যর্থ হতে পারে। মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থীরা জানান, আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, এবার নির্বাচনে কোন এমপি মন্ত্রীরা হস্তক্ষেপ করতে পারবেনা কিন্তু কিন্তু সোনারগাঁয়ে বড় নেতারা তা মানছেনা তারা প্রার্থীদের নির্বাচন থেকে সরে দাড়াতে প্রতি নিয়ত হুমকি ধামকি দিয়ে যাচ্ছেন এর মধ্যে একজন সংসদ সদস্যের হুমকিতে একজন মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী নির্বাচন থেকে সরে গেছেন। চেয়ারম্যান প্রার্থীরা জানান, নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার আগেই উপজেলার সর্বস্তরের নেতাদের সাথে কথা বলে প্রার্থী হয়েছি। অনেকেই আমাদের নির্বাচন করবেন বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। অনেকে আবার নেতাকর্মীদের খরচের জন্য টাকা নিয়েছেন অনেকে আবার টাকা নিয়ে সাথে গণসংযোগও করেছেন কিন্তু দিন বদলের পর দেখা যাচ্ছে সেই নেতা মোটা অঙ্কের অর্থের বিনিময়ে আরেক প্রার্থীর পক্ষে সভা সমাবেশ করছেন। এই যদি অবস্থা হয় তাহলে তৃনমুল থেকে জনবান্ধব নেতা কিভাবে নির্বাচিত হয়ে জনগনের সেবা করবে। সোনারগাঁয়ের নির্বাচন দিনে দিনে কালো টাকার মালিকদের কাছে বিক্রি হয়ে যাচ্ছে। এ ভাবে চলতে থাকলে আওয়ামীলীগের ধ্বংস নিশ্চিত।
এ বিষয়ে বর্তমান চেয়ারম্যান ও চেয়ারম্যান প্রার্থী এডভোকেট সামসুল ইসলাম ভুইয়া বলেন, কি দু:খ বলবো ভাই যার জন্য এতো কিছু করলাম সেই বলে টাকার কথা। টাকা না নির্বাচন হবে না সে জন্য এবার নান্নু’র কথা বলে অবশেষে বাবুল ওমরের নির্বাচন করার কথা বলে। তিনি বলেন, এ ভাবে একটা সুষ্ঠু নির্বাচন হতে পারে না। কালো টাকার জন্য আজ তৃনমুল নেতাকর্মীদের লোভ বেড়ে যাচ্ছে আর যিনি কালো টাকা খরচ করে নির্বাচনে জয়ী হবেন তারা জনগনের সেবা তো দুরের কথা তারা তাদের নির্বাচনে খরচের টাকা উঠানোর জন্য পাগল হয়ে যাবে। এতে জনগন সেবার বদলে অর্থ ব্যয় করে সেবা গ্রহন করতে হবে। পরিশেষে হুমকির মুখে পড়ে দল।




সর্বশেষ  
জনপ্রিয়  

ফেসবুকে যুক্ত থাকুন