শনিবার, ১৮ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৪ঠা জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
আজ শনিবার | ১৮ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

পুলিশের ক্লিয়ারেন্স পেতে গুনতে হচ্ছে বকশিশ, ডিএসবি ইফতেখার বেপরোয়া

বুধবার, ০৫ জুলাই ২০২৩ | ২:৫৩ অপরাহ্ণ

পুলিশের ক্লিয়ারেন্স পেতে গুনতে হচ্ছে বকশিশ, ডিএসবি ইফতেখার বেপরোয়া

ফাহাদুল ইসলাম সোনারগাঁ প্রতিনিধি

পুলিশের ক্লিয়ারেন্স পেতে গুনতে হচ্ছে বকশিশ নারায়ণগঞ্জ জেলার
থানা গুলোতে খোলামেলা ঘুষ বাণিজ্য বন্ধ হলেও পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট দেয়ার নামে বকশিশ আদায় এখনও বন্ধ হয়নি। বিশেষ প্রয়োজনে পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট নিতে থানা গুলিতে গেলে সেখানে কর্তব্যরত পুলিশ কর্তা ও সদস্যরা বকশিশ দাবি করেন। না দিলে উল্টো হয়রানি পর্যন্ত করতে দ্বিধাবোধ করেন না বলে অভিযোগ উঠেছে। বিভিন্ন অভিযোগে জানাগেছে, ভোগান্তির অপর নাম-পুলিশ ক্লিয়ারেন্স, জরুরী প্রয়োজনেও সহজে মিলছে না পুলিশ ক্লিয়ারেন্স।

সরকারী-বেসরকারী চাকরিতে যোগদান ও অন্যান্য প্রয়োজনে দ্রুততম সময়ে পুলিশ ক্লিয়ারেন্স পাওয়াটা সৌভাগ্যের বিষয়। দেশ যখন তথ্যপ্রযুক্তির যুগে অনেক দূর এগিয়েছে, ইউনিয়ন পর্যায়ে তথ্যসেবা কেন্দ্র চালু করা সম্ভব হয়েছে তখনও সহজে মিলছে না পুলিশ ক্লিয়ারেন্স। এটা এখনও রয়ে গেছে সেই মান্ধাতা আমলের মতোই। ক্লিয়ারেন্স পেতে হলে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে নোটিস পাঠাতে হবে জেলা পুলিশ সুপার ও ডিএসবি কার্যালয়ে। সেখান থেকে সংশ্লিষ্ট থানায় তা পাঠিয়ে দিয়ে অপরাধের খতিয়ান যাচাই করা হয়। তারপর প্রকৃত গ্রহীতার কাছে সেই রিপোর্ট পৌঁছানো হয়। এ প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করতে কমপক্ষে এক মাস লাগে। অনেক ক্ষেত্রে ২/৩ মাসও লাগে। আবার যিনি অন্য পথের আশ্রয় নেন তিনি ২/৩ দিনের মধ্যেই পেয়ে যান। এ জন্য তাকে খরচ করতে হয় বাড়তি অর্থ। অর্থাৎ টাকা দিলে সরাসরি থানা থেকেই একদিনে মিলছে পুলিশ ক্লিয়ারেন্স। না দিলে আইন দেখানো হয়, এসপি অফিসের মাধ্যমেই নিতে হবে এ রিপোর্ট। সম্প্রতি কয়েকজন ভুক্তভোগীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, যেই রিপোর্ট একদিনেই দেয়া সম্ভব সেটা পেতে সময় লাগে মাসেরও বেশি। জরুরী প্রয়োজনে ২/৩ দিনের মধ্যে পুলিশ ক্লিয়ারেন্স পেতে হলে হয় বড় তদবির নয় নগদ নারায়ণ লাগবেই। প্রশ্ন উঠছে- কেন এত সময় লাগবে, কেন এত ভোগান্তি। ব্যক্তির নামে তার নিজ থানায় কোন মামলা মোকদ্দমা আছে কিনা বা তিনি রাষ্ট্র ও সমাজের জন্য বিপজ্জনক ব্যক্তি কিনা সে তথ্য তো নিজ নিজ থানাতেই সংরক্ষিত থাকে। ওই থানা ইচ্ছে করলে এক ঘণ্টার মধ্যেই তা যাচাই-বাছাই করে একটা সনদ লিখে দিতে পারে। এ জন্য সেই জটিল পদ্ধতি অবলম্বন করতে হবে কেন? কেন সেই নোটিস জেলা পুলিশ সুপারের মাধ্যম হয়ে আসতে হবে থানায়?

ভুক্তভোগী রায়হান, নয়ন, সানাউল্লাহ, কামাল এবং মাসুদ রানা বলেন, পূর্বেও তারা পুলিশ ক্লিয়ারেন্স কয়েক দফায় করেছে, এমন ভোগান্তিতে কখন পড়তে হয়নি। সকল কিছু ঠিক থাকারপরও গত প্রায় ০৭ মাস ধরে শতশত আবেদন বাতিল করা হচ্ছে বিভিন্ন মিথ্যে অযুহাত দেখিয়ে। তবে ডিএসবি ইফতেখার আসার পূর্বে এমন পরিস্থিতি ছিলনা ভোক্তভোগীসহ থানার পাশে অবস্থিত দোকানদাররা এমনই মন্তব্য করেন।

হয়রানির একটি নমুনা হলো সঠিক ভাবে সত্যায়িত ও কাগজপত্র ঠিক থাকার পরও কারন দর্শানো হচ্ছে অনলাইনে-(Reason explained in remarks-ILLEGAL SCANNING ATTESTED. PLEASE RE APPLY WITH ORIGINAL ATTESTED)।

এছাড়া প্রবাস ফেরত যাত্রীরা পূনরায় অন্য দেশে যাওয়ার জন্য পুলিশ ক্লিয়ান্সের জন্য আবেদন করলে তাদের আবেদন বাতিল করার কারন দর্শানো হচ্ছে-(Reason explained in remarks-(ATTESTED IS NOT CORRECT PLEASE RE APPLY WITH ATTESTED OF EMBASSY OF BANGLADESH AND AUTHORIZATION LETTER)|

ক্তোভোগী আবেনকারী রায়হান, নয়ন, সানাউল্লাহ, কামাল এবং মাসুদ রানার স্ব-শরীরে ডিএসবি অফিসে গিয়ে তাদের সত্যায়িত কাগজপত্র ও পাসপোর্ট দেখালে ইফতেখার বলে সত্যায়নকারী একেক সময় একেক রকম স্বাক্ষর করে তাই বাতিল করা হয়েছে, আপনারা পূনরায় অন্য কাউকে দিয়ে সত্যায়িত করে আবেদন করেন। এছাড়া আবেদনকারীদের তারা অন্য কোন সহযোগিতা করেনি। বরং পূনরায় আবেদন করে আবার অপেক্ষা করতে হয়েছে ৭/৮ দিন। এরপর আবার বাতিল করা হয় তাদের আবেদন কারন দর্শনো হয় পূর্বের ন্যায় একই মন্তব্য। এছাড়া বর্তমানে আবেদন সাবমিট করার পর ৫/৬ দিন পর রিসিভ করা হয় বা বাতিল করা হয়। এরপর থানা থেকে তদন্ত করে প্রিন্ট করতে সময় লাগে ৫/৬ দিন। সম্পূর্ণ কাজটি হতে প্রায় সময় লাগে ১৮/২০ দিন। যা গত ছয় মাস পূর্বে ২/১ দিনের মধ্যে আবেদন রিসিভ হতো ৬/৭ দিনের ডেলিভারী কাজ হয়ে যেতো। এছাড়া গোপন সূত্রে জানা যায় যে, সত্যায়িত ও কাগজপত্র ঠিক থাকুক বা না থাকুন ৩০০ থেকে ৫০০ টাকা দিলেই ইফতেখার আবেদন করার কিছু সময়ের মধ্যে আবেদন রিসিভ করে দিচ্ছে। এছাড়া কেউ যদি ইউরোপ থাকে তাহলে ৫ হাজার এবং এশিয়ায় থাকলে ২ হাজার টাকায় আবেদন রিসিভ ও ডেলিভারী করে দিচ্ছে ইফতেখার। যাহার কিছু নমুনা: বাতিলকৃত আবেদন নং-15NA8XX, 15MHU42, 15FFXJ1, 15FJYKS, 15FJYX3, 15P3QT3,
15NA8U1,15P64HX,

রিসিভকৃত আবেদন: 15GD6N7, 15NA89J, 15P64LW, 15P3F8R, 15NBE1J, 15NAM62

গোপন সূত্রে জানা যায় যে, প্রত্যেক থানার সামনের কম্পিউটার দোকানদের সাথে ইফতেখারের পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সিন্ডিকেট রয়েছে। সে তাদের সাথে হোয়াটস্আপ এ্যাপ দিয়ে সব সময় যোগাযোগ করে থাকে।

ভোক্তভোগীরা বলেন এভাবে যদি চলতে থাকে তাহলে আমাদের পুলিশ ক্লিয়ারেন্স জন্য আমাদের লক্ষ লক্ষ টাকায় কেনা ভিসা বাতিল হয়ে যাবে। আমাদের অনেকের ভিসার মেয়াদ থাকে এক মাসের, পুলিশ ক্লিয়ারেন্স করতে যদি এক মাস লাগে তাহলে আমরা অন্যান্য কাজ করব কখন। এর পূর্বেও তার ব্যাপারে বিভিন্ন পত্রিকায় নিউজ আসে কিন্তু তারপর সে ক্ষান্ত হয়নি। তাই ভোক্তভোগীরা পুলিশ সুপারের দৃষ্টি আকর্ষন করেছেন।

এ বিষয়ে ডিএসবি ইফতেখার সাথে মুঠো ফোনে কথা বললে তিনি নারায়ণগঞ্জ পুলিশ সুপার কার্যালয়ে সরাসরি কথা বলার জন্য বলেন।




সর্বশেষ  
জনপ্রিয়  

ফেসবুকে যুক্ত থাকুন