মঙ্গলবার, ২১শে মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৭ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
আজ মঙ্গলবার | ২১শে মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

সিদ্ধিরগঞ্জে দিনদিন ভয়ঙ্কর হয়ে উঠেছে সোর্স পরিচয়ে মাদক ব্যাবসায়ীরা

শুক্রবার, ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ | ৬:০৮ পূর্বাহ্ণ

সিদ্ধিরগঞ্জে দিনদিন ভয়ঙ্কর হয়ে উঠেছে সোর্স পরিচয়ে মাদক ব্যাবসায়ীরা

ডিবি পুলিশের সোর্স বলে কথা, সোর্সদের অত্যাচার ও অপরাধ কর্মকান্ডের ইতিহাস বছরজুড়েই আলোচনায় আসে। বর্তমানে সিদ্ধিরগঞ্জে সাধারণ মানুষ ও ভুক্তভোগীদের কাছে মূর্তিমান আতঙ্কের আরেক নাম ডিবি পুলিশের সোর্স মাদক ব্যবসায়ী ইলিয়াস ওরফে ডাকাত ইলিয়াস বাহিনী। দিনদিন বেপরোয়া হয়ে উঠেছে ডিবি পুলিশের সোর্স মাদক ব্যবসায়ী ইলিয়াস ওরফে ডাকাত ইলিয়াস। তার অপর সহযোগীরা হলো মাদক ব্যবসায়ী ফরহাদ, সোর্স আলামিন, অয়ন, মাদক ব্যবসায়ী রতন ওরফে কাইল্লা রতন।

ওরা কখনও পুলিশ, কখনও ডিবি, কখনওবা ভয়ঙ্কর অপরাধী। সংঘবদ্ধভাবে নানা অপরাধে জড়িত রয়েছেন তারা। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও স্থানীয় প্রভাবশালী রাজনৈতিক ব্যক্তিদের আর্শিবাদপুষ্ট হয়ে বেশ কিছুদিন ধরে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা এলাকায় বেপরোয়া এবং ভয়ঙ্কর হয়ে উঠেছে সোর্স পরিচয়ে ইলিয়াস ও তার বাহিনী।

অভিযোগ উঠেছে বর্তমানে মাদক ব্যবসা, চঁাদাবাজি, অবৈধ ব্যবসা, ছিনতাই, ডাকাতি, চুরিসহ অসামাজিক কার্যকলাপ এবং অপরাধ জগতের নিয়ন্ত্রন করছেন ইলিয়াস বাহিনী। নারায়ণগঞ্জ জেলা ডিবি পুলিশের সোর্স পরিচয়ে ইলিয়াসের নিয়ন্ত্রণে চলছে সিদ্ধিরগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় মাদক ও জুয়ার স্পট। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর নাম ভাঙিয়ে ইলিয়াস প্রতিটি জুয়া ও মাদকের স্পট থেকে দৈনিক মোটা অংকের টাকার হাতিয়ে নিচ্ছেন বলে জানা গেছে। প্রশাসনের এমন নীরবতার কারনেই দিন দিন বেড়ে যাচ্ছে অপরাধীদের সংখ্যা।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ভুক্তভোগী জানান, ডিবি পুলিশের সোর্স পরিচয়ে ইলিয়াসের সেল্টারে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা এলাকায় চলছে রমরমা মাদক ব্যবসা। ইলিয়াসের শেল্টারে মিজমিজি পাগলা বাড়ি, টি.সি রোড মোল্লা বাড়ির পাশে, বাতান পাড়া, হিরাঝিল, নতুন মহল্লা সি.আই খোলা কাঠেরপুল, মিজমিজি কেন্দ্রীয় বড় কবরস্থান রাস্তা, শিমরাইলসহ অসংখ্য স্পটে চলছে মাদক ব্যবসা। তাদের এই মাদক ব্যবসায় বাধা দিলে তাকে নিয়ে চলে ষড়যন্ত্র। কখনো ডিবি পুলিশ দিয়ে গ্রেফতারের হুমকি আবার কখনো মারধরের হুমকিও দেওয়া হয়।

সূত্রে জানা যায়, ডিবি পুলিশের সাথে সোর্স ইলিয়াসের ভালো সখ্যতা থাকায় বুক ফুলিয়ে বীরদর্পে তার বাহিনীর মাধ্যমে রমরমা মাদক ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। অনেক সময় আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী অভিযান চালানোর আগেই সব মাদক ব্যবসায়ীদের পূর্বেই সতর্ক করে দেন সোর্স ইলিয়াস। যার ফলে অভিযান চালিয়েও মাদক ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে সফলতা পাচ্ছে না আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী।

অভিযোগ উঠেছে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর কিছু অসাধু কর্মকর্তারা বিভিন্ন অপরাধে জড়িত থাকার অভিযোগ এনে নিজেদের স্বার্থ হাসিলের জন্য সোর্সদের কথা মতো ভালো মানুষকে হয়রানি করে মোটা অংকের অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছেন। সোর্সদের কাজে লাগিয়ে মাদক ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে প্রতি মাসে মাসোহারা আদায় সহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকান্ডে নিজেদের জড়িয়ে ফেলছেন।

সম্প্রতি ঘটে যাওয়া কয়েকটি ঘটনায় সোর্সদের অপরাধ কর্মকান্ড, অত্যাচার ও সোর্সদের অপরাধ কর্মকান্ডের ইতিহাস বছরজুড়েই আলোচনায় আসে। ভুক্তভোগীরাই তার জ্বলন্ত প্রমাণ। সোর্সদের মিথ্যা তথ্যে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী যেমন অনাকাঙ্কিতভাবে বিপদের সম্মুখীন হয়, তেমনি সাধারণ মানুষও হয় নির্যাতিত। তাই তাদের বিরুদ্ধে এখনই ব্যবস্থা গ্রহণ করা না হলে ভবিষ্যতে এর প্রভাব আরো বৃদ্ধি পাবে বলে আশঙ্কা করছেন সাধারণ মানুষ।

স্থানীয়রা জানান, সোর্স হওয়ার সুবাদে ইলিয়াসের প্রতিটি এলাকায় নির্বিগ্নে বিভিন্ন অপরাধ অপকর্মসহ মাদক ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। কেউ যদি প্রতিবাদ করে তাহলে তাদের কাছে থাকা মাদকদ্রব্য দিয়ে প্রতিবাদ কারিকে ধরিয়ে দেয়ার হুমকি দিয়ে যাচ্ছে। তাছাড়া পাড়া-মহল্লায় আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর টহল তৎপরতা কমে যাওয়ায় প্রতিটি অলিতে-গলিতেই বাড়ছে অপরাধ-অপকর্মসহ মিলছে মাদক।

আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী যদি মাদক নির্মুলে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ না নেয় তাহলে আমাদের স্বপ্নদেখা সন্তানগুলো অচিরেই মাদকাসক্ত হয়ে পড়বে আর ধ্বংস হয়ে যাবে আমাদের যুব সমাজ।

এদিকে ইলিয়াস ও তার বাহিনীর অত্যাচার থেকে বাচঁতে প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষন করেন এলাকাবাসী।
এ বিষয়ে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম মোস্তফা বলেন, মাদকের বিরুদ্ধে আমাদের জিরো টলারেন্স ঘোষণা করা হয়েছে। মাদকের সাথে আমাদের কোন আপোষ নেই। জেলা পুলিশ থেকে মাদকের সাথে জড়িত সে যেই হোক তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করার নির্দেশ রয়েছে। পুলিশের কোন সোর্স নেই বলে জানান ওসি।




সর্বশেষ  
জনপ্রিয়  

ফেসবুকে যুক্ত থাকুন