শনিবার, ২৭শে জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১২ই শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
আজ শনিবার | ২৭শে জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

সিদ্ধিরগঞ্জে দিনে অবৈধ গ্যাস বিচ্ছিন্ন, রাতেই সংযোগ

সোমবার, ২০ মে ২০২৪ | ৩:২২ পূর্বাহ্ণ

সিদ্ধিরগঞ্জে দিনে অবৈধ গ্যাস বিচ্ছিন্ন, রাতেই সংযোগ

নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে দিনে অভিযান চালিয়ে অবৈধ গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে তিতাস গ্যাস অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি। আবার রাতে  সংযোগ দিয়ে দেয় অবৈধ গ্যাস ব্যবহারকারিরা। তিতাস আর অবৈধ গ্যাস ব্যবহার কারিদের মধ্যে এমন ঈঁদুর বিড়াল খেলা চলছে দীর্ঘদিন করে। এতে সরকার হারাচ্ছে কোটি কোটি টাকার রাজস্ব। 

বোববার(১৯ মে) মিজমিজি মতির সড়ক এলাকায় দুপুর ১ টা থেকে বিকেল সাড়ে ৪ টা পর্যন্ত তিনটি মশার কয়েল কারখানা অভিযান চালিয়ে অবৈধ গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার পর সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিতাসের নারায়ণগঞ্জ সদরের ব্যবস্থাপক প্রকৌশলী মোস্তাক মাসুদ মোহাম্মদ ইমরান বলেন, আইনের দুর্বলতার কারণে অবৈধ গ্যাস সংযোগ প্রতিহত করা যাচ্ছে না।

অভিযানে বসুন্ধরা কয়েল কারখানা মালিক জাহাঙ্গীরকে ১ লাখ টাকা ও ডিকে কয়েল কারখানা মালিক আলমকে ১ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। পাগলা কয়েল কারখানার মালিক কামাল পালিয়ে যাওয়া তাকে জরিমানা করা সম্ভব হয়নি। তবে কারখানার মালামাল জব্দ করা হয়। 

এসময় তিনটি কারখানার অবৈধ গ্যাস লাইন বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে বলে জানান ভ্রাম্যমান আদালতের বিচারক নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ইলুরা ইয়াছমিন। 

স্থানীয় বাসিন্দা রফিকুল ইসলাম জানান, এর আগেও ওই তিনটি কারখানায় ৬ বার অভিযান চালিয়ে জরিমানা ও আবৈধ গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেছিল তিতাত কতর্ৃপক্ষ। দিনে তিতাসের লোকজন অভিযান চালিয়ে গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে চলে যাওয়ার পর রাতে আবার কারখানা মালিকরা সংযোগ দিয়ে দেয়। 

এবারো তার ব্যতিক্রম হবে না বলে তিনি মনে করেন। কারণ, অভিযান শেষে ম্যাজিস্ট্রেট চলে যাওয়ার পর কারখানা থেকে জব্দ করা নয়টি মোটর ও বিভিন্ন মালামাল ফেরত দিয়েছে তিতাসের লোকজন। এর পরই ফের সংযোগ দেওয়ার প্রস্ততি চলছে বলে জানান রফিকুল ইসলাম। 

মালামাল ফেরতের বিষয়ে জানতে চাইলে তিতাস কর্মকর্তা মোস্তাক মাসুদ মোহাম্মদ ইমরান বলেন, মালামাল কাকে ফেরত দিব আর কাকে দিবনা এসব সিদ্ধান্ত আমরা নেব। এটি ম্যাজিস্ট্রের কাজ নয়। 

বারবার অভিযান চালিয়ে অবৈধ সংযোগ চিচ্ছিন্ন করা হলেও আবার সংযোগ দেওয়ার পর কেন কঠোর আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, অবৈধ গ্যাস ব্যবহারের বিরুদ্ধে করা আইন দুর্বল। আইনের দুর্বলতার কারণে আমরা কঠোর ব্যবস্থা নিতে পারছিনা। তাই অবৈধ গ্যাস সংযোগ নিয়ন্ত্রন বা প্রতিহত করা সম্ভব হচ্ছেনা। 

খোঁজ নিয়ে যানা গেছে, একই আভিযানিক দল গত ৯ মে সিদ্ধিরগঞ্জের কদমতলী পশ্চিম পাড়া এলাকায় অভিযান চালিয়ে ৪৮ টি বাড়ি ও ৭ মে আটি ভূমি পল্লি এলাকার ৩৮ টি বাড়ির অবৈধ গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন ও রাউজার জব্দ করে নিয়ে যায়। কিন্তু পর দিনই সব বাড়ির মালিকরা তিতাস অফিসে গিয়ে রাউজার ফেরত এনে সংযোগ দিয়ে দেয়। 

বিচ্ছিন্ন করার পর আবার কি করে সংযোগ দেওয়া ও তিতাস অফিস থেকে রাউজার ফেরত আনা হয়েছে জানতে চাইলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন বাড়ির মালিক জানায়, বাড়ির চুলা অনুযায়ী ২০ থেকে ৫০ হাজার টাকা করে দিয়ে রাউজার এনে আবার সংযোগ দেওয়া হয়েছে। তারা আরো জানান, অভিযানের সময় প্রত্যেক বাড়ির মালিকের নাম ও মোবাইল নাম্বার লিখে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে তিতাস অফিসের কর্মকর্তা মো: গিয়াস উদ্দিন যোগাযোগ করে। তার সঙ্গে দেন দরবার করা হয়। 

সিদ্ধিরগঞ্জের অধিকাংশ এলাকায় অবৈধ গ্যাস সংযোগের সঙ্গে গিয়াস উদ্দিন জড়িত বলে বাড়ির মালিকরা দাবি করলেও বিষয়টি অস্বীকার করেন তিতাস কর্মকর্তা গিয়াস উদ্দিন।    




সর্বশেষ  
জনপ্রিয়  

ফেসবুকে যুক্ত থাকুন