নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের (মেয়র) ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভীর মা ‘মমতাজ বেগমের’ কবরে সংসদ সদস্য একেএম শামীম ওসমান, ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন, দোয়া-দরুদ পাঠ এবং মোনাজাতে শরিক হয়েছেন।
মঙ্গলবার (২৭ জুলাই) বিকালে মাসদাইর কবরস্থানে যান ওসমান পরিবারের অন্যতম সদস্য শামীম ওসমান। কষ্টসিক্ত চোখে প্রিয় চাচীর কবরের পাশে দাঁড়িয়ে থাকেন কিছু সময়। এ সময় ছাত্রলীগ, যুবলীগের ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী-সমর্থকরাও কাঁদেন নীরবে।
কবর জিয়ারত ও শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে, মেয়র ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভীর বাড়িতে গিয়ে দেখা করেন সংসদ সদস্য শামীম ওসমান। মায়ের মৃত্যুশোকে কাতর আইভীকে সমবেদনা জানাতে নগরীর দেওভোগ এলাকায় তার পৈর্তৃক বাড়ি ‘চুনকা কুটিরে’ ছুটে যান শামীম ওসমান।
এ সময় আইভী ও তার শোকাহত পরিবারের সদস্যদের সমবেদনা জানান এবং সবার খোঁজখবর নেন। পাশাপাশি বড়ভাই সুলভ স্নেহে মেয়র আইভীর মাথায় কয়েকবার হাত বুলিয়ে সান্ত্বনাও দেন আওয়ামী লীগের এই আলোচিত সংসদ সদস্য।
শামীম ওসমান ওসমান মেয়রের মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে বলেন, চাচী (মমতাজ বেগম) আল্লাহওয়ালা মানুষ ছিলেন। তিনি আমাকে মায়ের মতো আদর করতেন। ১৯৯৬ সালে এমপি হওয়ার পর আমি চাচীর দোয়া নিতে এসেছিলাম। ওই সময় তিনি নিজ হাতে আমাকে খাইয়ে দিয়েছিলেন। এ সময় তিনি মেয়র আইভীর মা প্রয়াত মমতাজ বেগমকে নিয়ে স্মতিচারণ করেন।
এসময় শামীম ওসমানের সাথে ছিলেন- নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবু হাসনাত মো. শহীদ বাদল, মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক খোকন সাহা, মহানগর আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি চন্দন শীল, নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শাহ্ নিজাম, মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জাকিরুল আলম হেলাল, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মীর সোহেল আলী, মহানগর যুবলীগের সভাপতি শাহাদাৎ হোসেন সাজনু, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি বর্তমান যুবলীগ নেতা এহসানুল হক নিপু প্রমুখ।
সাংবাদিকদের শামীম ওসমান বলেন, পৌরপিতা চুনকা’র সহধর্মীনি আমার মায়ের মতোই। একজন মা যেভাবে স্নেহ করে, ভালোবাসা দেয়, সেই ভাবেই ভালোবাসা দিয়েছেন। আমার জানামতে, উনি আল্লাহওয়ালা মানুষ ছিলেন। একজন সন্তান হিসেবে, আমি আমার মায়ের জন্য যেভাবে দোয়া করি, একই ভাবে উনার জন্যও দোয়া করেছি। দোয়া করি আল্লাহর কাছে, আল্লাহ যাতে উনাকে বেহেস্ত নসিব করেন। উনার কবরের আজাব মাফ করে দেন। এ সময় শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়ে শামীম ওসমান বলেন, যে বয়সেই হক না কেন, এতিম হওয়া যে কত কষ্টের। সেটা আমি জানি। কারণ আমি নিজেও একজন এতিম। তাই আমি দোয়া করি, আল্লাহ যেন তাদেরকে কষ্ট সহ্য করার ক্ষমতাদেন।
এর আগে গত ২৫ জুলাই রাত সাড়ে ৯টায় শামীম ওসমানের বড় ভাই ও নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের সংসদ সদস্য সেলিম ওসমান দেওভোগে মেয়র আইভীর বাস ভবনে গিয়ে তাঁর সাথে সমবেদনা জ্ঞাপন করেছিলেন।
গত ২৫ জুলাই রোববার বিকেল পৌনে ৫টায় মেয়র আইভীর মাতা মমতাজ বেগম(৭৩) শহরের দেওভোগের বাসায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করে। মৃত্যুকালে তিনি ৫ সন্তান সহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন। সেদিন এশার নামাজের পর মেয়র আইভীর বাসভবনের অদূরে অবস্থিত বাইতুন নূর জামে মসজিদে মরহুমার জানাজার নামাজ শেষে মাসদাইর কবরস্থানে দাফন করা হয়।