রবিবার, ২৮শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১৫ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
আজ রবিবার | ২৮শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

ক্রোনী অ্যাপারেলসে পাওনাদি না দিয়েই ৫৮ শ্রমিক ছাটাই, অসন্তোষ

বুধবার, ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ | ৬:৪৫ পূর্বাহ্ণ

ক্রোনী অ্যাপারেলসে পাওনাদি  না দিয়েই ৫৮ শ্রমিক ছাটাই, অসন্তোষ

নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় ক্রোনী অ্যাপারেলস নামে একটি কারখানায় গত তিন মাসে তৃতীয়বারের মতো শ্রমিক ছঁাটাই ও অসন্তোষের ঘটনা ঘটেছে। মঙ্গলবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) সকালে চাকরিচ্যুত কর্মীরা কাশিপুর হাটখোলা এলাকার কারখানার সামনে অবস্থান নেন। প্রায় তিন ঘণ্টা অবস্থানের পরও বকেয়া বেতনাদিসহ আনুষঙ্গিক বিষয়ে সমাধান না পেয়ে ফিরে যান কর্মীরা।

শ্রমিকদের অভিযোগ অন্তত ৫৮ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীকে বকেয়া বেতন না দিয়ে চলতি মাসের বেতন দিয়ে পদত্যাগপত্রে স্বাক্ষর করতে চাপ দেওয়া হচ্ছে ।

ক্রোনী অ্যাপারেলসের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা মাহাদী হাসান বলেন, শবে বরাতের রাতে আমাদের ৫৮ জনকে ছঁাটাই করা হয়। তখন বলা হয়েছিল, যাবতীয় বেতন-ভাতা বুঝিয়ে দেওয়া হবে। আজ সকালে বেতন নিতে এসে দেখি আমাদের নাম ছবিসহ গেটে টানিয়ে দেওয়া হয়েছে। 

আমরা কি দাগি অপরাধী যে আমাদের ছবি এভাবে টানানো হবে? তার ওপর আমাদের চার মাসের বেতন বাকি। তারা কেবল চলতি ফেব্রুয়ারি মাসের বেতন দেবে, বাকি নভেম্বর থেকে জানুয়ারি মাসের বেতন দেবে না। উল্টো দুই মাস আগের তারিখ বসানো পদত্যাগপত্রে স্বাক্ষর করতে চাপ দিচ্ছে তারা।

কারখানার আরেক কর্মী আনোয়ার হোসেন বলেন, আমাদের রুলস হচ্ছে, কাউকে চাকরিচ্যুত করতে হলে তিন মাসের বেতন দিতে হবে। আমরা এখানে একেকজন ৮ থেকে ১০ বছর কাজ করছি। গত তিন মাস কেবল হরতাল, অবরোধ, নির্বাচন ইত্যাদির অজুহাত দিয়ে বেতন দেয়নি। এখন বেতন ছাড়াই ছঁাটাই করা হয়েছে।

কারখানার সহকারী ব্যবস্থাপক আফাজ খান বলেন, তিন মাস ধরে আমরা মানবেতর জীবন যাপন করেছি। বাড়িওয়ালা প্রতিনিয়ত ভাড়ার জন্য চাপ দিচ্ছে। মহল্লার দোকানে হাজার হাজার টাকা বাকি জমে গেছে। এমন অবস্থায় অমানবিকের মতো মালিকপক্ষ আমাদের ছঁাটাই করেছে। সমাধান না পেলে আমরা শ্রম আদালতে যাব।

এ বিষয়ে কারখানার এইচআর (অ্যাডমিন) মাইদুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বিষয়টি এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। প্রশ্ন শুনে বলেন, আমি একটু ব্যস্ত আছি। কথা বলতে পারছি না।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ক্রোনী গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আসলাম সানী বলেন, আমরা তাদের দেনা-পাওনা পরিশোধ করব। কারখানায় মানুষ বেশি হয়ে গেলে একটু অ্যাডজাস্টমেন্ট করতেই হয়। তাদের দেনা-পাওনা হিসাব করছি। দ্রুতই অ্যাকাউন্টে দিয়ে দেব। তাদের বলা হয়েছে চলতি মাসের বেতন নিয়ে যেতে। পরবর্তী সময়ে বাকি বেতন পর্যায়ক্রমে পরিশোধ করা হবে।

এ বিষয়ে ফতুল্লা মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) নুরে আযম মিয়া বলেন, এ বিষয়ে থানায় কেউ কোনো অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলেই ব্যবস্থা নেয়া হবে। 

উল্লেখ্য, গত ২৫ ডিসেম্বর ক্রোনী গ্রুপের ‘ক্রোনী টেক্স সোয়েটার লিমিটেড’ কারখানা লে অফ ঘোষণা করা হয়। তাতে প্রায় ৮০০ শ্রমিক চাকরিচ্যুত হন। পরবর্তী সময়ে চলতি মাসের ৮ ফেব্রুয়ারি একই গ্রুপের ‘অবন্তি কালার টেক্স লিমিটেড’-এর শ্রমিকেরা দুই মাসের বকেয়া বেতনের দাবিতে বিক্ষোভ করেন।




সর্বশেষ  
জনপ্রিয়  

ফেসবুকে যুক্ত থাকুন