
বিশেষ প্রতিনিধি : সিদ্ধিরগঞ্জে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তেমন তৎপরতা না থাকায় দিনদিন বেড়েই চলেছে চাঁদাবাজি দখলবাজি ছিনতাইসহ নানা অপরাধ কর্মকান্ড। বৈষম্য বিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর নাসিক ৬নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর, সিদ্ধিরগঞ্জ থানা যুবলীগের আহ্বায়ক মতিউর রহমান মতি আত্মগোপনে যাওয়ার পরম মতির অপরাধ সাম্রাজ্য নিয়ন্ত্রনে নিতে একাধিক সন্ত্রাসী ও অপরাধী চক্র মিশনে নমেছে।
এই আধিপত্য বিস্তার নিয়ে তাদের মধ্যে চলছে তীব্র প্রতিযোগীতা। এদিকে ছাত্র-জনতা আন্দোলনের পর পুলিশ পূর্বের ন্যায় এখনও সক্রিয় না হওয়ায় ওই সব অপরাধীদের আতংক নিয়ে দিনাতিপাত করছেন রাজরীবিদ, ব্যবসায়ীসহ আপামর সাধারণ মানুষ। এসব বাহিনীর মধ্যে বেশ বেপরোয়া হয়ে উঠেছে মাদকের ডিলার চিহ্নিত সন্ত্রাসী হত্যা মামলাসহ প্রায় এক ডজনের বেশী মামলার আসামি আদমজী নতুন বাজার এলাকার পক্ষি মজিবরের ছেলে নাহিদ। সর্বত্রই বিরাজ করছে নাহিদ আতংক।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মামুন মাহমুদের অনুসারী সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ৬নং ওয়ার্ড যুবদলের সাধারণ সম্পাদক আক্তারুজ্জামান মৃর্ধা ও বিএনপি নেতা হানিফ বেপারী
ওই দুই নেতার স্বার্থ হাসিল করার জন্য নাহিদের সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে বিভিন্ন জায়গায় চাঁদাবাজি, এলাকার ব্যবসা বানিজ্য ও দোকান পাট দখল করাসহ নানান অপরাধ কর্মকান্ড করে বেড়াচ্ছে।
মাদক সম্রাট নাহিদের রয়েছে কয়েকটি বাহিনী এই বাহিনীটি পরিচলনা করেন নাহিদের অন্যতম সহযোগী মাষ্টারমাইন্ড একি এলাকার ইউনুছের ছেলে হাসান।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ব্যক্তি জানায়, সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ৬নং ওয়ার্ড যুবদলের সাধারণ সম্পাদক আক্তারুজ্জামান মৃর্ধা গত এক মাস ধরে বিভিন্ন মামলার ভয় দেখিয়ে ও চাঁদাবাজি করে বিভিন্নজনের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। আক্তারুজ্জামান মূর্ধা ৬নং ওয়ার্ড সাবেক কাউন্সিলর সিরাজুল ইসলাম মন্ডলের সহযোগী ছিলেন ।
এক সময় সিরাজ মন্ডলের পেট্রোল পাম্পের ক্যাশিয়ার ছিলেন ওই বিএনপি নেতা আক্তারুজ্জামান মৃর্ধা। গত ৫ আগস্ট বৈষম্য বিরোধী ছাত্র জনতার আন্দোলনে সরকার পতনের পর থেকে এলাকায় দখল ও লুটপাট শুরু করেন আক্তারুজ্জামান। শত-শত লোকজন নিয়ে ব্যবসা দখলে নিতে আদমজী ইপিজেডে বেশ কয়েকবার মহড়াও দিয়েছেন তিনি।
এছাড়াও আদমজী সোনামিয় বাজার ও নতুন বাজরের বিভিন্ন ব্যবসায়ীরে কাছে তিনি চাঁদা দাবি করেন চাঁদা না দিলে বিভিন্ন মামলায় ফাঁসিয়ে দেয়ার হুমকি প্রধান কছেন বলে এমন অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। এদিকে তার এসব কর্মকাণ্ডের কারণে ক্ষুব্ধ বিএনপির নেতা কর্মীরা আক্তারুজ্জামান মৃর্ধার কর্মকাণ্ডের কারণে বিএনপির মত দলের সুনাম ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বলে মনে করেন বিএনপির স্থানীয় নেতারা। তারা তাকে দ্রুত বহিষ্কারের দাবি জানিয়েছেন।
একটি সুত্র জানায়, আক্তারুজ্জামান মৃর্ধা ও বিএনপি নেতা হানিফ বেপারীর শেল্টারে চিহ্নিত সন্ত্রাসী, মাদক সম্রাট ও একাধিক হত্যা মামলার আসামি নাহিদ এবং তার সন্ত্রাসী বাহিনী এলাকায় বিভিন্ন সন্ত্রাসী কর্মকান্ডসহ নানান অসামাজিক ও অনৈতিক কর্মকান্ড করে আসছে।
উল্লেখ্য গত (২৩ সেপ্টেম্বর) রাতে সিদ্ধিরগঞ্জে আদমজী নতুন বাজার এলাকায় নাসিক ৬ নং ওয়ার্ড বিএনপির কার্যালয়ে তালা লাগিয়ে দেয় নাহিদের সন্ত্রাসী বাহিনী। এ ঘটনায় রাতেই ওয়ার্ড বিএনপির সহ-সভাপতি আরসাদ গাজী বাদী হয়ে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। এবং গ্রেপ্তারেরও দাবি জানান।
এর ধারাবাহিকতায় চিহ্নিত সন্ত্রাসী, মাদক সম্রাট নাহিদ এবং তার সন্ত্রাসী বাহিনীর বিরুদ্ধে পত্র পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হলে নড়েচড়ে বসে প্রশাসন। তবে অভিযান চললেও আগেই অভিযানের সংবাদ পেয়ে আত্মগোপনে চলে যায় চিহ্নিত সন্ত্রাসী নাহিদ ও তার সহযোগীরা।
স্থানীয়রা বলছেন নাহিদ আত্মগোপনে থাকলেও ওই দুই নেতা আক্তারুজ্জামান ও হানিফ বেপারীর নির্দেশে বের হয়ে তাদের নির্দেশনা পালন করে আবার চলে যায়। এতে তারা আরও অস্বস্তি ও আতংকে বসবাস করছেন।
নাম না প্রকাশের শর্তে অনেকেই বলেন, শীঘ্রই নাহিদের লাগাম টেনে না ধরলে সে আরও বেপরোয়া উঠবে ওই দুই গুরুর শেল্টারে।
সেনাবাহিনী, র্যাব ও পুলিশের কাছে এলাকাবাসীর দাবি, নাহিদ ও তার শেল্টারদাতাদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা যাতে আর কেউ অপরাধ কর্মকান্ডে জড়িত হওয়ার সাহস না পায়। তা না হলে নাসিক ৬ং ওয়ার্ডে শান্তি শৃংখলা বিঘ্নসহ প্রাণহানীর শংকা রয়েছে।