সিদ্ধিরগঞ্জ প্রতিনিধি : সিদ্ধিরগঞ্জে নাসিক ৩ ও ৪নং ওয়ার্ডের ব্যবসায়ী ও সাধারণ মানুষের মাঝে আতংকের নাম আইয়ুব আলী মুন্সী, মাহবুব, হিরা ও সেন্টু। বিএনপির নাম ভাঙ্গিয়ে ওই দুই ওয়ার্ডের বিভিন্ন স্থানে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে দখল-সন্ত্রাসী কর্মকান্ড-লুটপাট-নৈরাজ্য-চাঁদাবাজির আধিপত্য দখল নিতে মরিয়া হয়ে উঠেছে তারা।
এমনকি মসজিদ পরিচালনা কমিটিতেও তাদের প্রভাব বিস্তারের অভিযোগ উঠেছে। সম্প্রতি ৩ নং ওয়ার্ডের মুক্তিনগরে তিন তলা জামে মসজিদ কমিটি গঠন নিয়ে বেশ সমালোচিত হয়েছেন আইয়ুব আলী মুন্সী। স্থানীয়রা এ নিয়ে ভয়ে কেউ কোনো প্রতিবাদ করতে সাহস পায়নি।
এছাড়াও গত দুই দিন আগে চিটাগাংরোডে আন্তঃজেলা বাস পরিবহন কাউন্টার মালিক সমিতি ঘোষণা করলে তাদের প্রকৃত মুখোশ উম্মোচন হয়ে পড়ে। পরিবহন কাউন্টার মালিকদের অনেকেই বলেন আমাদের কাউন্টার দখল করে মিটিং করে কমিটি ঘোষণা করেন অথচ আমরাই এ বিষয়ে কিছু জানিনা। আমাদেরকে এ বিষয়ে কিছু বলাও হয়নি।
আবার কবির নামে শ্রমিকলীগের নেতাকে দিয়ে এ কমিটির প্রস্তাবনা উপস্থাপন করা হয়। মনে হচ্ছে এখানে চাঁদাবাজির উৎসস্থল তৈরী করতেই তারা এ কমিটি করেন এবং নিজেরাই এর হর্তকর্তা বনে যায়।
এদিকে, দখল-সন্ত্রাসী কর্মকান্ড-লুটপাট-নৈরাজ্য-চাঁদাবাজির বহাল রাখতে আওয়ামী নেতাদের সঙ্গে বিএনপির ওই নেতা ও তার সহযোগীদের যোগসাজশের কারণে দলের শীর্ষ নেতৃবৃন্দকে নানা প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হচ্ছে। ক্ষোভ দেখা দিয়েছে তৃণমূল নেতাকর্মীদের মাঝে।
স্থানীয়দের সূত্রে জানা যায়- সিদ্ধিরগঞ্জের ৪নং ওয়ার্ডের শিমরাইল এলাকার বিএনপি নেতা আইয়ুব আলী মুন্সী, আটি এলাকার মাহবুব হোসেন, বিলুপ্তকৃত ছাত্রদল নেতা একে হিরা ও বিএনপি নেতা পরিচয়দানকারী কামরুল ইসলাম সেন্টুর বিরুদ্ধে নানা অপকর্মের ফিরিস্তি জানিয়ে বিভিন্ন প্রশাসনিক দপ্তরে ব্যবস্থা নেওয়ার আবেদন জানালেও কোনো প্রতিকার পাননি সেখানকার ব্যবসায়ী ও সাধারণ মানুষ। অত্র এলাকার ব্যাবসায়ী সাধারন মানুষ ও পরিবহন মালিক শ্রমিকরা চাদাঁবাজি বন্ধে জরুরী সেনা বাহিনীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
আইয়ুব আলী মুন্সী ও মাহবুবের রোষানলে পড়েছে বৃহৎ রপ্তানিমুখী পোশাক প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানসহ শিমরাইল এলাকায় চলাচলরত বিভিন্ন পরিবহন শ্রমিক ও মালিকরা। প্রতিষ্ঠানের মালিকরা বলেন, আমরা ব্যবসায়ী। আমাদের পরিবার কখনো কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত ছিল না। বিএনপি নেতা আইয়ুব আলী মুন্সী, মাহবুব, হিরা ও সেন্টু তাদের বাহিনী প্রতিটি গার্মেন্টস ও পরিবহন থেকে চাঁদা চেয়েছেন। তাদের চাদাঁ না দিলে ব্যাবসা করতে দিবে না বলে আমাদের অব্যাহত হুমকি দিয়ে যাচ্ছেন।
শিমরাইলে চলাচলরত পরিবহন মালিকদের আইয়ুব আলী মুন্সীর অফিসে নিয়ে বিভিন্ন ভাবে হুমকি প্রদান করে বলে গাড়ি চালাতে হলে তাদের দাবিকৃত চাদাঁ দিয়ে গাড়ি চালাতে হবে। না হলে কোন গাড়ি এই রোডে চলবেনা। তাদের অব্যাহত হুমকি ও পরিবহন সেক্টর দখলের কারনে আতংকিত হয়ে পড়েছে শিমরাইল এলাকায় চলাচলরত পরিবহনের মালিক ও শ্রমিকরা।
অভিযোগ উঠেছে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপি’র সভাপতি সাবেক সাংসদ মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিনের নাম ভাঙ্গিয়ে নাসিক ৪নং ওয়ার্ড বিএনপি নেতা আইয়ুব আলী মুন্সী, মাহবুব, হিরা ও সেন্টু তাদের বাহিনী নিয়ে আটি হাউজিং, ভুমিপল্লীসহ ৪নং ওয়ার্ডের বিভিন্ন ব্যাবসা প্রতিষ্ঠান, বাড়িঘরে চাদাঁবাজি করে গত ৫ আগষ্টের পর থেকে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। যার কারনে অত্র এলাকায় সুনাম ক্ষুন্ন হচ্ছে বিএনপি’র।
সুত্রে জানাযায়, সিদ্ধিরগঞ্জের ৪নং ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর ও আলোচিত সাতখুন মামলার ফাসিঁর আসামী নুর হোসেনের পরিবারের সবকিছু এখন নিয়ন্ত্রনে নিয়েছে আইয়ুব আলী মুন্সী, মাহবুব, হিরা ও সেন্টু বাহিনী।
এদিকে বিএনপির নেতা আইয়ুব আলী মুন্সী, মাহবুব, হিরা ও সেন্টুর আগ্রাসী কর্মকান্ড ও লুটপাট রুখতে সেনাবাহিনীসহ বিভিন্ন আইনশৃংখলাবাহিনীর হস্তক্ষেপ কামনা করছেন এলাকাবাসী।
এসব বিষয় নিয়ে জানতে চাইলে নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার প্রত্যুষ কুমার মজুমদার বলেন, ইতিমধ্যে আমাদের কাছে কিছু চাদাঁবাজদের তালিকা এসেছে আমরা সেগুলো যাচাই করে খুব শীগ্রই ব্যাবস্থা নিবো।
তিনি আরও বলেন, যারা বর্তমানে চাদাাঁবাজি, দখল বাণিজ্যের সাথে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে আমরা যৌথ অভিযান পরিচালনা করবো। এসব অপকর্মকারীদের কোন ছাড় দেয়া হবে না।