বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে শাওন (২৭) নামে এক গার্মেন্ট কর্মীকে তুলে নিয়ে গিয়ে মামলার ভয় দেখিয়ে দেড় লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ৩ পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে। এরপর ছাত্র-জনতার গণ অভ্যুথানের পর হাসিনা সরকারের পতন পর পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে ভুক্তভোগী তার স্বজনরা ওই পুলিশ কর্মকর্তাদের সাথে যোগাযোগ করলে তারা টাকা ফেরত দেয়ার আশ^াস দিলেও শনিবার (৩১ আগষ্ট) রাতে তাদের উল্টো হুমকি ধামকি দিয়ে থানা থেকে বের করে দেন। অভিযুক্ত ওই ৩ পুলিশ কর্মকর্তা হলেন উপ-পরিদর্শক মোকলেস, মামুন ও আল-ইসলাম। ভুক্তভোগী শাওন থানার মিজমিজি চৌধুরীপাড়া এলাকার মিজানুর রহমানের ছেলে। তিনি নিমাইকাশারী সেবা নিটিং এ কর্মরত রয়েছেন।
ভুক্তভোগী শাওনের মামা সেবা নিটিং এর কর্ণধার লিটন বলেন, গত ৩০ জুলাই বিকেল ৫ টায় তার অফিসের সামনে থেকে শাওন বিএনপি রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত এমন কথা বলে একটি সাদা মাইক্রো যোগে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক মোকলেস, মামুন ও আল-ইসলাম তাকে তুলে নিয়ে যায়। এসআই মোকলেস গাড়ির সামনে বসা ছিলেন। এসআই মামুন গাড়িতে টেনে হিজড়ে শাওনকে গাড়িতে তুলেন। পরে পুলিশ গাড়িটি সিদ্ধিরগঞ্জ থানার মেইন গেইটের সামনে নিয়ে রাখেন।
পরে পুলিশ ৩ লাখ টাকা দাবি করে। টাকা না দিলে শাওনকে হত্যা, অগ্নিসংযোগ ও লুটের মামলা দেওয়া হবে বলে জানায়। এক পর্যায়ে দারোগার সাথে দেড় লাখ টাকায় রফাদফা হয়। শাওনের শশুর শরিফ, চাচাতো ভাই হৃদয় ও আমার অফিসের কর্মচারী মারুফ এসআই মোকলেসের কাছে দেড় লাখ টাকা নিয়ে গেলে মোকলেস টাকাটা এসআই আল-ইসলামের কাছে দিতে বলে। টাকা পেয়ে পুলিশ শাওনকে ছেড়ে দেয়।
শাওনের শ^শুর শরীফ বলেন, গাড়িতে তুলে নেয়ার পর খবর পেয়ে আমি পুলিশের কাছে যাই। তারা ৩ লাখ টাকা দাবি করে। আমি বলি আমি গরিব মানুষ আমার কাছে এতো টাকা নেই। পরে পুলিশ বলে তুই টাকা দিবি কেনো তার মামা লিটন অনেক টাকার মালিক সে দিবে। এরপর তিনি সেখান থেকে ফিরে এসে প্রবাসে তার এক আত্মীয় মারা গেছে তার কিছু টাকা ছিলো সেখান থেকে ওই দেড় লাখ টাকা সংগ্রহ করে পুলিশকে দেই।
পুলিশকে টাকা দেয়ার সময় সেখানে থাকা শাওনের আরেক মামা হৃদয় জানান, পুলিশাক কম টাকা দিতে চাইলে তারা কোনোভাবেই নিবেন না। পরে শরিফ ভাইয়ের কাছে থাকা ১ লাখ ৩০ হাজার টাকার সাথে আমি আরও ২০ হাজার টাকা দিয়ে মোট দেড় লাখ টাকা দেই।
এ বিষয়ে জানতে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার উপ পরিদর্শক (এসআই) মোখলেছের মোবাইলে একাধিকবার ফোন দিলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। তবে এসআই মামুন বলেন আমি এ বিষয়ে কিছুই জানিনা। অপরদিকে ওই তিন পুলিশ কর্মকর্তা শাওনকে তুলে নিয়ে এসেছেন বলে স্বীকার করেন এসআই আল ইসলাম। টাকা নেয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি এসব কিছু জানিনা। লোকটি ভালো ছিলো বিধায় তাকে ছেড়ে দিয়েছি।