বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতা আন্দোলনে রফিকুল ইসলাম নামে একজন শহীদ হওয়ার ঘটনায় দায়ের করা হত্যা মামলায় নিরীহ সাধারণ মানুষদের আসামি করা হয়েছে বলে একাধিক সূত্র দাবি করছেন। ইতিমধ্যে এ মামলাটি নিয়ে ব্যাপক আলোচনা ও সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে। এ মামলায় নাসিক ২ নং ওয়ার্ড বিএনপি নেতা মোজাম্মেল কারাগারে থেকেও আসামি হয়েছেন।
এছাড়াও অনেক সাধারণ মানুষকেও আসামি করা হয়েছে। এদের মধ্যে একজন হচ্ছেন সিদ্ধিরগঞ্জ থানার মৌচাক এলাকার চঁান মিয়ার ছেলে চাকুরিজীবি মো. শহিদ। গ্রেপ্তার আতংকে তিনি দিনাতিপাত করছেন। সাধারণ জীবন যাপন ব্যাহত হচ্ছে। মামলা থেকে অব্যহতি পেতে বিভিন্ন জায়গায় দৌড়ঝাপ করেও কোন কুল কিনারা না পেয়ে অনেকটাই যাযাবর জীবন যাপন করছেন। সার্বক্ষনিক গ্রেপ্তার আতংকে থাকায় কাজকর্মও ঠিকমত করতে পারছেন না।
জানাগেছে, গত ২১ জুলাই বৈষম্য বিরোধী আন্দোলন চলাকালীন সিদ্ধিরগঞ্জের হিরাঝিল এলাকায় গুলিতে রফিকুল ইসলাম (২৪) নিহতের ঘটনায় নারায়ণগঞ্জের জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে দায়ের করা মামলায় মো. শহিদকে ১০৫ নং ক্রমিকে আসামি করা হয়েছে। মামলায় শেখ হাসিনাকে প্রধান আসামী করে ১০৭ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরো ১০০/১২০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
বিএনপি নেতা মোজাম্মেল ছাড়াও এরআগে এ মামলার আরেক ব্যবসায়ী আশরাফকে ৩৯ নং আসামি করা নিয়ে বেশ আলোচনা ও সমালোচনা হয়।
আশরাফের পর মো. শহিদকে আসামি করার বিষয়টি জানাজানি হলে এলাকায় এলাকায় সাধারণ মানুষের মাঝে ক্ষোভ ও আতংক বিরাজ করছে। তারা বলছেন এভাবে যদি এলাকার সাধারণ মানুষদের আসামি করা হয় তাহলে তো ঘুম থেকে উঠে মোজাম্মেল, আশরাফ ও শহিদের মত তাদেরও শুনতে হবে তারাও হত্যা মামলার আসামি। গ্রেপ্তার এড়াতে এলাকা ছাড়া হয়ে ভবঘুরে জীবনযাপন করতে হবে।
আর এ সুযোগে যারা আওয়ামী সরকারের রাজনীতি করে লুটেপুটে বেড়িয়েছে তারা পার পেয়ে যাবে। তাদের দাবি দ্রুত মামলা থেকে নীরিহ সাধারণ মানুষদের অব্যাহতি দিতে হবে। তাদেরকে যেনো হয়রানি না করা হয়। এছাড়া নতুন কোনো মামলায় আর যেন কোনো নিরাপরাধ কাউকে জড়ানো না হয়।
মামলায় অভিযুক্ত চাকুরিজীবি মো. শহীদ বলেন, ২১ জুলাই হিরাঝিলে গুলিতে রফিকুল ইসলাম নামে একজন নিহতের ঘটনায় দায়ের করা মামলায় আমাকে আসামি করা হয়েছে। অথচ এসব ঘটনার সাথে আমি জড়িত নই। আমি কোনো রাজনীতিও করিনা। হঠাৎ করে জানতে পারি আসাকে
সাধারণ চাকুরি করে পরিবার পরিজনের জীবিকা নির্বাহ করে আসছি। কেউ প্রতিহিংসা বসত আমাকে আসামি বানিয়েছে। আইনশৃংখলা বাহিনীর কাছে আমি মিনতি করছি, সঠিক ও নিরেপক্ষ তদন্ত করে আমাকে এ মামলা থেকে অব্যাহত দেয়া হউক।
তবে, এ ব্যাপারে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ওসি আল মামুন বলেন, আদালতের নির্দেশে আমরা মামলাটি এফআইআর হিসেবে রেকর্ড করেছি। তদন্তের সময়ে বিষয়টি আমরা দেখবো।
এবিষয়ে মামলার বাদী নিহত রফিকুল ইসলামের মা সুফিয়া বেগমের ফোনে একাধিকার ফোন করলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।