আজ ২০ এপ্রিল, ২০২১ ভোর রাতে খবর আসে ওসি ফতুল্লার নিকট। রাতে গাঁজা এসেছে ইসমাইলের বাসায়। দ্রুত এসআই শামীম মিয়াকে ফোর্সসহ পাঠানো হয় ইসমাইলের দৌলতপুর এলাকার হালিম মিয়ার ভাড়া বাসায়। অভিযান চালায় শামীম। ৩৫ দিনের দুধের শিশুর আতুর ঘর থেকে পাওয়া যায় বস্তা ভর্তি ২৫ কেজি গাঁজা। এবার গল্পটা জানা যায় ইসমাইলের নিকট থেকে।
পেশায় একজন গাড়ি চালক ছিল ইসমাইল। সায়েদাবাদ থেকে চট্টগ্রাম রুটে লোকাল বাস চালাতো সে। চৌদ্দগ্রাম থেকে মাদক ব্যসায়ী হারুন(ছদ্মনাম) মাঝে মাঝেই গাঁজাসহ তার গাড়িতে অধিক ভাড়া দিয়ে যাতায়াত করতো। সেখান থেকেই পরিচয়। বাসে মাঝেমাঝেই কথা হতো। হারুন সামান্য পুঁজি দিয়ে ব্যবসা শুরু করে অনেক টাকার মালিক হয়েছে। “জীবনে বড় কিছু করতে হলে রিস্ক নিতে হয়” এ কথা জেনেছিল হারুনের নিকট থেকে। সেই একটি বাক্য খুব মনে ধরেছিল ইসমাইলের। এরপর সুযোগের পালা। সায়েদাবাদ-চট্টগ্রাম গাড়ি চালিয়ে এ ব্যবসা করা যাবেনা। তাই বাস চালানোর চাকুরিটা ছেড়ে দেয় ইসমাইল। কিছু জমানো টাকা এবং ধার-দেনা করে একটি সিএনজি বেবিট্যাক্সি কিনে ইসমাইল। শুরুটা এখান থেকেই। পুঁজি তেমন নেই। তাই প্রথমে মাত্র দুই কেজি গাঁজা এনে শুরু করেন ব্যবসা। লাভ চারগুন। জমে ওঠে নতুন ব্যবসা। এরপর ব্যবসার পরিধি বাড়ে। কিন্তু এমন লাভজনক ব্যবসায় যত মূলধন তত লাভ। নিজেকে সংবরণ করতে পারেনা ইসমাইল। এবার মূলধন বাড়াতে বিক্রি করে দেয় সিএনজি বেবিট্যাক্সিটি। বড় চালানে এবার আনতে হবে মাল। হারুনকে ফোন দিয়ে পাঠিয়ে দেয় আগাম টাকা। হারুন ২৫ কেজি গাাঁজা এনে পৌঁছে দেয় ইসমাইলকে। আর পুলিশের কাছে পৌঁছে যায় সে খবর।
৩৫ দিনের শিশু ছেলে রেখে এবার ২৫ কেজি গাঁজাসহ বাবা জেলে। শিশু বাচ্চাটি হয়তো বুঝবে না তার বাবাকে কেন দেখতে পাচ্ছে না। রিস্ক নিয়ে বড়লোক হওয়ার বাসনা আর থাকবে কিনা ইসমাইলের সেটাও দেখতে অপেক্ষায় থাকতে হবে আমাদের। আপাতত মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের মামলায় হবে তার বিরুদ্ধে।