বিশেষ প্রতিনিধি: নারায়ণগঞ্জ বন্দরে চাঞ্চল্যকর সাংবাদিক শেখ ইলিয়াস হত্যাকান্ড পরিকল্পিত। হত্যার বেশ কয়েকদিন আগে থেকেই এই পরিকল্পনা করা হয়েছে বলে একটি সূত্রে জানা গেছে। তবে হত্যাকান্ড পরিকল্পনার মূল মাস্টার মাইন্ড ছিলেন বন্দর থানা যুবলীগ নেতা পরিচয়দানকারী মাসুদ প্রধান। তার পরিকল্পনায় জিওধরা চৌরাস্তা বাজারে প্রকাশ্যে সাংবাদিক শেখ ইলিয়াসকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়।
কে এই মাসুদ প্রধান গ্রুপ, প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যা করলেন সাংবাদিক শেখ ইলিয়াসকে ? কী তাদের পরিচয়? তাদের এমন ক্ষমতার পেছনে কে আছেন?। এই প্রশ্ন নিয়ে ঘুরপাক খাচ্ছে পুরো বন্দরসহ নারায়ণগঞ্জ জুড়ো। ঠিক সেই মূহুর্তে সাংবাদিক শেখ ইলিয়াস হত্যার ক্ষমতার পেছনে কে আছেন, তাদের পরিচয় তুলে ধরে অনলাইন নিউজ পোর্টাল এবং স্থানীয় পত্র-পত্রিকায় ধারাবাহিকভাবে সংবাদ প্রকাশ করা হয়েছে।
মাসুদ প্রধানের সংক্ষিপ্ত পরিচয়ঃ বন্দর উপজেলার কলাগাছিয়া ইউনিয়ন জিওধরা এলাকার মৃত নুরুল মিয়ার ছেলে মাসুদ প্রধান। তিনি কর্মক্ষেত্রে দীর্ঘ সময়ই সৌদি আরবে কাটিয়েছেন । সর্বশেষ তিনি করোনা ভাইরাসের কয়েক মাস পূর্বে দেশে আসে। এরপর তিনি জিওধরা চৌরাস্তা বাজারে একটি অফিস খুলে বসেন, সেই অফিস থেকেই এলাকায় মাদকের শেল্টার, অবৈধ গ্যাস সংযোগসহ বিভিন্ন অপরাধ কর্মকান্ড নিয়ন্ত্রণ করে রাজনীতির ছত্রছায়ায়।
জানা গেছে, মাসুদ প্রধান এলাকা নিয়ন্ত্রণ করার জন্য একটি গ্রুপ তৈরি করে থাকে। সেই গ্রুপের সদস্য ছিলেন, জিওধরা এলাকার মৃত আঃ হামিদ মিয়ার ছেলে হযরত আলী, মিনা, মুসা, মৃত জামাম মিয়ার ছেলে মাদক ব্যবসায়ী ও পুলিশের সোর্স তুষার। এরই মধ্যে অপরাধ কর্মকান্ডে সক্রিয় ভাবে জড়িত ছিলেন হযরত আলী ও তুষার। মূলতঃ মাসুদ প্রধানের পরিকল্পনায় তারা এলাকায় সকল অপরাধমুলুক কাজ করতেন।
এলাকাবাসী জানান, মাসুদ প্রধান বিদেশে থেকে ফিরে এসে এলাকায় অফিসের নামে টর্চার সেল খুলে বসে। এই টর্চার সেলে বসে তার পালিত সন্ত্রাস তুষার বাহিনীর গ্রুপ দিয়ে বিভিন্ন অপকর্ম করে থাকে। ভয়ে তাদের বিরুদ্ধে কথা বলতে পারে না এলাকাবাসী। কেউ প্রতিবাদ করলে মাসুদ প্রধানের অফিস কক্ষের টর্চার সেলে নিয়ে তার পালিত সন্ত্রাসীদের দ্বারা নির্যাতিত হতে হয়েছে অনেককে। কিন্তু সাংবাদিক ইলিয়াস এই মাসুদ প্রধান গ্রুপের অপকর্মসহ অবৈধ গ্যাস সংযোগের বিরুদ্ধে ধারাবাহিক সংবাদ প্রকাশ করায় মাসুদ প্রধানের নির্দেশে পরিকল্পিত ভাবে তাকে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়।
এলাকাবাসী আরও জানান, মাসুদ প্রধান সাংবাদিক ইলিয়াসকে টর্চার সেলে ডেকে নিয়ে দু’দফা মারধর করে। কিন্তু তার পরও তাদের বিরুদ্ধে স্বোচ্ছার ছিল সাংবাদিক ইলিয়াস । কখনও অপরাধীদের সাথে আপোষ করেনি। মাসুদ প্রধান বন্দর থানা যুবলীগ নেতা পরিচয় দিয়ে এলাকায় প্রভাব বিস্তার করে থাকে। এমনকি তার টর্চার সেলের ভিতরে নারায়ণগঞ্জ মহানগর স্বেচ্ছাসেবকলীগের সাধারণ সম্পাদক ও ২৩নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর সাইফুউদ্দিন আহমেদ দুলাল প্রধানের সাথে মাসুদ প্রধানের মিছিলের ছবি দেওয়ালে লাগিয়ে রাখে। এবং তার শেল্টারেই এলাকায় সকল অপরাধমুলুক কর্মকান্ড চালিয়ে যেতো মাসুদ প্রধান এমনটাই বললেন এলাকাবাসী।
সাংবাদিক ইলিয়াস হত্যার ১০ দিন পেরিয়ে গেলেও মামলার ৩নং আসামী মাসুদ প্রধানসহ বাকী গুলোকে এখনো গ্রেফতার না হওয়ায় নিহতের পরিবার ও এলাকাবাসীর মধ্যে এক রকম আতংক বিরাজ করছে।