আব্দুস সাত্তার: রূপগঞ্জ (নারায়ণগঞ্জ) প্রতিনিধি ঃ নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার ভুলতা জেনারেল হাসপাতাল এন্ড ডায়াগোনস্টিক সেন্টারে ভুল চিকিৎসায় গর্ভের বাচ্চার মৃত্যুর অভিযোগ পাওয়া গেছে। রূপগঞ্জের তারাবো পৌরসভার খাদুন গ্রামের গৃহবধূ আমেনা বেগম (২৭) বাদী হয়ে রূপগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করেছেন । মামলা নং-৬ (৩) ২০২১ইং।
পুলিশ জানায়, তারাবো পৌরসভার খাদুন গ্রামের সবুজ মিয়ার স্ত্রী আমেনা বেগম গর্ভবতী হয়ে চিকিৎসার জন্য ভুলতা জেনারেল হাসপাতাল এন্ড ডায়াগনষ্টিক সেন্টারে যায়। সেখানে গাইনি ও শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ সার্জন ডাঃ সৈয়দা সোনিয়া রহমানের অধীনে আমেনা বেগম চিকিৎসা নেন। গত ১৮ জানুয়ারি আমেনা বেগমের আল্ট্রাসোনোগ্রামসহ বিভিন্ন পরীক্ষা নিরীক্ষা করে গর্ভের বাচ্চা ও আমেনা বেগম সুস্থ্য আছেন মর্মে চিকিৎসক জানান। পরে চিকিৎসক দেখানোর ধারাবাহিকতায় ১৬ ফেব্রুয়ারি আমেনা বেগম আবারো ওই চিকিৎসকের শরনাপন্ন হন। তখন তাকে আবারো আল্ট্রাসোনোগ্রামসহ বেশ বিছু পরীক্ষা করানো হয়। এসময় আমেনা বেগম ও তার গর্ভের বাচ্চা আরো ভাল থাকার জন্য নিয়োজিত চিকিৎসক কিছু ওষুধ প্রয়োগ করেন। ওষুধ খাওয়ার পর থেকে আমেনা পেট ব্যাথায় আক্রান্ত হন। গত ১৭ ফেব্রুয়ারি পেট ব্যাথা নিয়ে ডাঃ সোনিয়া রহমানের কাছে গেলে আমেনা বেগমকে ভুলতা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করেন। পরে ব্যাথা উপশমের জন্য চিকিৎসক ঘুমের ইনজেকসন ও ট্যাবলেট প্রয়োগ করলে পেটের ব্যাথা আরো বেড়ে যায়। এসময় ডাঃ সোনিয়া রহমান গৃহবধূ আমেনা বেগমকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তির পরামর্শ দেন। একর্যায়ে গৃহবধূ আমেনা বেগমকে ভুলতা জেনারেল হাসপাতাল থেকে বের করে দেন। উপায়ন্তর না দেখে মুমুর্ষ অবস্থায় আমেনা বেগমকে পাশ্ববর্তী ভুলতা মেমোরি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে গাইনি ও স্ত্রী রোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ডাঃ লায়লা ভানু আল্ট্রাসোনোগ্রামসহ প্রয়োজনীয় পরীক্ষা করে জানান, আমেনা বেগমের গর্ভের বাচ্চার মৃত্যু হয়েছে। অতিমাত্রার ইনজেকশন পুশ ও ওষুধ প্রয়োগে আমেনা বেগম গর্ভের বাচ্চার মৃত্যু হয়েছে। ১৯ ফেব্রুয়ারি সেখানে আমেনা বেগমের গর্ভের মৃত বাচ্চা অপারেশন করে বের করা হয়। আমেনা বেগম বর্তমানে চিকি]সাধীন রয়েছেন। তার অবস্থা এখনো সংকটাপন্ন।
এ ব্যাপারে ২ মার্চ মঙ্গলবার গৃহবধূ আমেনা বেগম বাদী হয়ে ভুলতা জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসক সোনিয়া রহমান ও আল্ট্রাসোনোগ্রাফী ডাঃ মোঃ শাহআলমকে আসামী করে রূপগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করেন। ভূলতা জেনারেল হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোঃ মিলন মিয়া বলেন, মায়েদের জরায়ু ও টিউবে বাচ্চা জন্ম নেয়। জরায়ুর বাচ্চা সুস্থ্যভাবে ভুমিষ্ট হয়। আর টিউবের বাচ্চা ৩-৪ মাস বয়সের মধ্যেই অপারেশন করে বের করতে হয়। তবে ভুলতা জেনারেল হাসপাতালের আল্ট্রাসোনোগ্রামের প্রতিবেদনে বাচ্চাটি জরায়ূতে না টিউবে সেই প্রতিবেদন সঠিক না হওয়ায় সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। রূপগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মহসিনুল কাদির বলেন, এ ব্যাপারে রূপগঞ্জ থানায় মামলা রুজু করা হয়েছে। তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।