![দৈনিক নারায়ণগঞ্জের ডাক](https://dailynarayanganjerdak.com/media/2021/05/dailynarayanganjerdak-Footer-Logo-2021.png)
ফাহাদুল ইসলাম সোনারগাঁ প্রতিনিধি ঃ নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলার ইউনিয়নের ৪ নং ওয়ার্ডের কালিগঞ্জ গ্রামের বাসিন্দা মরহুম হাজী শামসুদ্দিনের দুই ছেলে আশাবুদ্দিন ও শাহাবুদ্দিনের জোর জুলুম ও অবৈধভাবে জমি দখলে গ্রামবাসী অসহায়। চিহ্নিত ভূমিদস্যু আশ্রাফ উদ্দিন ও সাহাবুদ্দিনের অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে বিন্নিপাড়া সহ আশপাশের এলাকাবাসী। নিরীহ মানুষের জমি ও সরকারী খাল দখল করে রাতের আধারে বালু ভরাট করে ফেলছে ভূমি খেকো আশ্রাফ উদ্দিন ও সাহাবুদ্দিন নামে দুই সহোদর। এমনকি সোনারগাঁ উপজেলা নির্বাহী অফিসার কেও বৃদ্ধাঙ্গুলি প্রদর্শন করে জমি দখল ও বালু ভরাট অব্যাহত রেখেছে। একটি সুত্র হতে জানা যায়,সোনারগাঁ উপজেলা নির্বাহী অফিসার দুইবার মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে লক্ষাধিক টাকা জরিমানা করলেও থামেনি ভূমিখেকো আশ্রাফ উদ্দিন ও সাহাবুদ্দিন। মোগড়াপাড়া ইউনিয়ন ভূমি অফিসের ভূমি সহকারী কর্মকর্তা জালালউদ্দিন আহম্মেদ গত ২৮ অক্টোবর সহকারী কমিশনার ভূমি সোনারগাঁ কে সরকারী খাল ও জমি উদ্ধারের জন্য একটি লিখিত পত্র দেন। তাতে তিনি উল্লেখ করেন কাবিলগঞ্জ এলাকার হাজ্বী মোঃ সামসুদ্দিনের পুত্র আশ্রাফ উদ্দিন ও সাহাবুদ্দিন জোর পূর্বক রাতের অন্ধকারে ড্রেজারের মাধ্যমে বালু দিয়ে সরকারের ১নং খাস খতিয়ান ভূক্ত প্রবাহমান খাল ও কৃষি জমি ভরাট করে ফেলে। এর মধ্যে মেনিখাল মৌজার খতিয়ান নং-১ দাগ নং ১৮৪,জমির আকার খাল, জমির পরিমান ৩৫ শতাংশ, দাগ নং ১৯৭ জমির পরিমান ৭৬ শতাংশ সহ প্রায় ১শ বিঘা,তার ভাই সাহাবুদ্দিন কাবিলগঞ্জ মৌজার ১নং খতিয়ান,দাগ নং ২৬ জমির পরিমান ২৭ শতাংশ,দাগ নং২৭ জমির পরিমান ১৮ শতাংশ বালু দিয়ে ভরাট করে ফেলে।অবৈধ ভাবে জমি ভরাটের পরিমান ৬০ বিঘা। উক্ত ভূমিদস্যুদের বিরুদ্ধে কৃষক ও জমির মালিক গন মানববন্ধনসহ সরকারের বিভিন্ন দফতরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হলেও কোন কাজ হয়নি। এলাকাবাসী সুত্রে জানা যায়, ভূমিদস্যু আশ্রাফ উদ্দিন ও সাহাবুদ্দিন জমি ও সরকারি খাল দখল সহজ লভ্য করতে মোগড়াপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার মজিবুর রহমানের নেতৃত্বে একটি সংঘবদ্ধ চক্র গড়ে তোলে নিরীহ লোকের জমি দখল করে যাচ্ছে। এ ব্যাপারে মোগড়াপাড়া ইউপির মেম্বার মজিবুর রহমান মুঠোফোনে প্রতিবেদককে বলেন,আমার ইউপি কার্যালয়ে আসেন।আমার বিরুদ্ধে যদি কারো জমি দখলের প্রমান পান যে শাস্তি দিবেন মাথা পেতে নিব।আমি এ কাজের সাথে জড়িত নই।আমার ২৫ শতাংশ জমিও তারা ভরাট করেছে,টাকা পরে দিবে। ড্রেজার মালিক মোতালিব মুঠোফোনে জানান,আমাকে কন্ট্রাকে ভাড়া নিয়েছে।আমাকে যেখানে বালু ফেলতে বলে আমি সেখানে বালু ফেলি। ভূমিদস্যু সাহাবুদ্দিনের মুঠোফোনে একাধিক বার কল করা হলে মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। সহকারী ভূমি কর্মকর্তা জালালউদ্দিন আহম্মদ বলেন,আমি ষ্টাফ সহ ৫/৬ জন ঘটনাস্থলে গিয়েছি। সকল অবৈধ কার্যকলাপ বন্ধের জন্য বলি ও সকল কার্যক্রম বন্ধ করে দেই।কিন্তু তারা রাতের আধারে অবৈধ ভাবে ড্রেজারের মাধ্যমে বালু ভরাটের কাজ চালিয়ে যায়।এমনকি উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নির্দেশেও বালু অপসারণ করে নাই।আমি এসিল্যান্ড স্যারকে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহনের অনুরোধ করে ইতি মধ্যে একটি পত্র দিয়েছি। এ ব্যাপারে সহকারী কমিশনার ভূমি মোঃ আল মামুন মুঠোফোনে জানান,এখন আর বালু ভরাট করেনা।তাদের ৭ দিন সময় দিয়েছিলাম সময় হয়েছে। বঙ্গবন্ধুর জন্মশত বার্ষিকীর একটি অনুষ্ঠান নিয়ে ব্যস্ত আছি।সেটা শেষ করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করবো। গ্রামবাসীর সূত্রে জানা যায়, আশাবুদ্দিন ও শাহাবুদ্দিন পাশের গ্রাম বিন্নি পাড়া আরিয়ান ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেড একটি মোবাইল তৈরীর কোম্পানি স্থাপন করে। কোম্পানিটি স্থাপনের পর পরই আশপাশের জায়গা গুলো মালিকের অনুমতি ছাড়াই জোরজবস্তি ভাবে জমি ভরাটে মরিয়া হয়ে ওঠে। গ্রামবাসী তাদের জায়গা দখলে বাধা দিলে তাদেরকে বিভিন্ন রকম ভয়-ভীতি দেখিয়ে তার কার্যক্রম চালিয়ে যায়। ভুক্তভোগীদের অভিযোগ কোম্পানি ফ্যাক্টরি জায়গার প্রয়োজন ক্ষেত্রে গ্রামবাসীর জায়গাগুলো জোরপূর্বক দখলে ব্যস্ত, স্থানীয় মেম্বার চেয়ারম্যান বিভিন্ন রকম বিচার সালিশের পরেও কোনরকম সমাধা হচ্ছে না বলে গণমাধ্যমকে জানাতে বাধ্য হয়। এছাড়াও ভুক্তভোগীরা জানান কোম্পানির মালিক আশাবুদ্দিন কিছু জায়গা ক্রয় করে জায়গার মালিক কে কিছু টাকা বায়না দিয়ে পরবর্তী টাকা আদায় করতে গেলে তার ব্যবহারিত পিস্তল দিয়ে গ্রামবাসীকে ভয়-ভীতি দেখিয়ে শুট করে আতঙ্ক করে রাখে । ভুক্তভোগী গ্রামবাসী ভূমিদস্যু আশাবুদ্দিন শাহাবুদ্দিনের কবল থেকে স্বস্তিতে বসবাস ও তাদের জায়গা গুলো অবৈধভাবে দখল মুক্ত করতে চায়।