রূপগঞ্জ প্রতিনিধি: করোনাভাইরাসের সংক্রামণে জনজীবন থমকে গেলেও চাঁদাবাজদের চাঁদাবাজি বন্ধ হয়নি। নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে ট্রাফিক পুলিশ ও হাইওয়ে পুলিশকে ম্যানেজ করে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের উপর লেগুনা স্ট্যান্ড। ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে চলাচলরত দূরপাল্লার বাসের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে অবাধে চলছে ফিটনেসবিহীন লেগুনা। এ যেন দেখার কেউ নেই। শুধু ফিটনেসবিহীনই নয়, কিশোর ড্রাইভার ও হেলপার নাবালক এছাড়া অধিকাংশ লেগুনারই নেই রুট পারমিট,নেই লেগুনা চালকদের বৈধ লাইসেন্স ও ইনস্যুরেন্স, প্রতিটি লেগুনায় রয়েছে চলন্ত বোমা।
তারপরও লেগুনার যাত্রীদের কাছ থেকে আদায় করা হচ্ছে দ্বিগুণ ভাড়া। এসব লেগুনাগুলো উপজেলার গাউছিয়া থেকে নরসিংদী জেলার মাধবদী পর্যন্ত চলাচল করে। আর এ দিকে গাউছিয়া-মাধবদী সড়কে লোকাল বাসের সংকট থাকায় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে যাত্রীরা বাধ্য হয়েই যাতায়াত করছে ওই সব লেগুনায়। মঙ্গলবার বিকেলে উপজেলার গাউছিয়া কাঁচাবাজারের সামনে রাজনের লেগুনা স্ট্যান্ডে গিয়ে পাওয়া যায় এ সব তথ্যের সত্যতা। গাউছিয়া লেগুনা স্ট্যান্ডের চাঁদাবাজ রাজন লেগুনা থেকে চাঁদা তুলার কথাটি নিজে স্বীকার করে বলেন, প্রতিদিন গাউছিয়া থেকে মাধবদী পর্যন্ত ২০ থেকে ২৫ টি লেগুনা চলাচল করে। এর জন্যে প্রতিটি লেগুনার চালককে প্রতিদিন চাঁদা দিতে হয় ১৫০ টাকা থেকে ২০০ টাকা করে। এছাড়া পুলিশ মান্তি হিসেবে নেওয়া হচ্ছে লেগুনা প্রতি ২ হাজার থেকে ২হাজার ২‘শ টাকা করে।
রাজন আরও বলেন, প্রতি মাসে মান্তির টাকা উঠে ৪০ হাজার টাকার মতো কিন্তু ৪৪ হাজার টাকা খরচ হয়। কিভাবে হয়? প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, এর মধ্যে ট্রাফিক পুলিশকে ১১হাজার টাকা ও হাইওয়ে পুলিশের ১৭ হাজার টাকা করে প্রতি মাসে দিতে হয়। এছাড়া ফাঁড়ির পুলিশতো রয়েইছে তাদেরকেও দিতে হয়। লেগুনা চালক রাব্বি জানান, প্রতিটি লেগুনা থেকে দৈনিক চাঁদা ২০০ টাকা করে চাঁদা আদায় করা হয়। এছাড়া পুলিশ মান্তি ২৫০০ টাকা করে দিতে হয়। লেগুনা চালক সাইদুর ইসলাম জানান, আমার কাছ থেকে প্রতিদিন রাজনে ১৫০টাকা করে চাঁদা নেয় আর প্রতিমাসে ২৫০০ টাকা পুলিশ মান্তি বলে নেই । আর টাকা দিতে দেরি হলে রেকার দিয়া গাড়ি নিয়া যায়। পরে রেকার বিল দিয়া গাড়ি আনতে হয়।
এ বিষয়ে ট্রাফিক পুলিশের টিআই মনির হোসেন বলেন, লেগুনা স্ট্যান্ড থেকে আমরা কোনো টাকা নেই না। আমাদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ মিথ্যা তবে এসব অবৈধ লেগুনা স্ট্যান্ডের বিরুদ্ধে আমরা প্রতিনিয়ত ব্যবস্থা নিচ্ছি। এ বিষয়ে মুঠোফোনে কাঁচপুর হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ মনিরুজ্জামান বলেন, অবৈধ স্ট্যান্ড একদিনে সরানো সম্ভব না। এছাড়া পুলিশ মান্তির বিষয়টি মিথ্যা তবে কেউ যদি পুলিশের কথা বলে চাঁদা নেয় তাহলে তাকে ধরিয়ে দেন।