
নারায়ণগঞ্জের ডাক.কম : নারায়নগঞ্জ-৫ আসনের সাংসদ সেলিম ওসমান ও নারায়নগঞ্জ -৪ আসনের সাংসদ শামীম ওসমান এমপির নির্দেশে ৩ নেতার দ্বন্দের অবসান করেছে। সোমবার দুপুরে বন্দর উপজেলা পরিষদে চেয়ারম্যানের কার্যালয়ে কাউন্সিলর দুলাল প্রধান, ছাত্রলী খান মাসুদ ও ছাত্রলীগ নেতা হাসনাত রহমান বিন্দুকে মিলিয়ে দেন। বন্দর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি এম এ রশিদ, মহানগর আওয়ামীলীগের যুব ও ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক হুমায়ন কবির মৃধা, মহানগর সেচ্ছাসেবকলীগের যুগ্ম সাধারন সম্পাদক মাহবুবুর রহমান কমল, মনিরুল ইসলাম মনু উপস্থিত থেকে ২ সাংসদের নির্দেশে দ্বন্দের অবসান করে তাদের মিলিয়ে দেন এবং অতীত ভুলে আগামীতে দল চাঙ্গা ও আরো গতিশীল কিভাবে করা যায় তা নিয়ে কাজ করার আহবান জানান এম এ রশিদ।
উল্লেখ্য যে,উনারায়ণগঞ্জের বন্দরে ডিশ ব্যবসা নিয়ন্ত্রণকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় ড্রেজারে অগ্নিসংযোগ, বাড়িঘরে হামলা ও ভাংচুরের ঘটনা ঘটেছে। দুই পক্ষের এই সংঘর্ষে নারীসহ দুইজন আহত হয়েছে। এলাকায় এখনও থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। যেকোন সময় রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের আশঙ্কা করছেন এলাকাবাসী। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত (রাত ৮টা) এলাকায় পুলিশ মোতায়েন করা রয়েছে।
এলাকাবাসী জানান, ডিশ ব্যবসাকে নিয়ে কয়েকদিন ধরেই স্থানীয় শ্যামল, শাহনেওয়াজ খান, পারভেজ খানের সাথে মহানগর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হাসনাত রহমান বিন্দু এবং নাসিকের ২৩ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর, মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক সাইফুদ্দিন আহমেদ দুলাল প্রধানের দ্বন্দ্ব চলে আসছিল। শ্যামল ও শাহনেওয়াজের পক্ষ নিয়েছেন স্থানীয় যুবলীগ নেতা খান মাসুদ। ডিশ ব্যবসাকে কেন্দ্র সরকারদলীয় দুই পক্ষের মধ্যকার দ্বন্দ্ব সংঘর্ষে রূপ নিয়েছে।
বন্দর ফাড়ির ইনচার্জ ইন্সপেক্টর মাসুদ জানান, শনিবার গভীর রাতে খান মাসুদের সমর্থক শ্যামলের সহযোগী হাসান (২২) ও সাব্বির (২৪) নামের ২ ডিশকর্মীকে ছাত্রলীগ নেতা বিন্দুর কর্মীরা মারধর করার সময় পুলিশ দুইজনকে থানায় নিয়ে আসে। এ নিয়ে সকালে উভয়পক্ষের লোকজন থানায় গেলে সহকারী পুলিশ সুপার (খ সার্কেল) উভয়পক্ষকে মদনপুর ইষ্ট টাউনে তার কার্যালয়ে ডাকেন। যুবলীগ নেতা খান মাসুদসহ কয়েকজন সহকারী পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে বিষয়টি মিমাংসায় বসেন।
খান মাসুদ অভিযোগ করে বলেন, যে সকল ব্যবসায়ীরা ৩০ বছর যাবত এালাকায় ক্যাবল ব্যবসা করে আসছেন তাদের পেটে লাথি মারতে দলের অনুপ্রবেশকারীরা ডিশ বাবুর লাইন বন্দরে ঢুকানোর পায়তারা করছে। আমি সার্কেল অফিসে থাকাবস্থায় ২৩ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর দুলাল প্রধানের অনুসারী সন্ত্রাসী ও মাদক ব্যবসায়ীরা আমার বাড়িতে হামলা করে। তারা একটি মটর সাইকেল ভাংচুর করে আমার বড় বোন স্বপ্না (৪৫) ও আসিফকে (২৫) কুপিয়ে আহত করে। আমি এ ঘটনার সুষ্ঠ বিচার চেয়ে মামলা করব।
স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা কাউন্সিলর দুলাল প্রধান পাল্টা অভিযোগ করে বলেন, শনিবার রাতে খান মাসুদের লোক রাজুর নেতৃত্বে ২৫/৩০ জন সন্ত্রাসী কবরস্থান রোডে আমার সকল তার এবং অফিস সংলগ্ন মেশিন রুম হতে মেশিন লুট করে নিয়ে যায়। কিছুক্ষন আগে আমার একটি ড্রেজার জ্বালিয়ে দিয়েছে। পাইপের ক্ষতি সাধন করেছে। এতে প্রয় ২০ লাখ টাকা ক্ষতি হয়েছে। তিনিও মামলা করবেন বলে জানিয়েছেন।
এদিকে ছাত্রলীগ নেতা হাসনাত রহমান বিন্দু বলেন, শনিবার রাত ১০টায় খবর পেলাম কে বা কারা লেজারার্স এলাকা হতে আমার স্থাপিত ক্যাবল নেটওয়র্কের মেশিন ও তার কেটে নিয়ে গেছে। গভীর রাতে দেওয়ানবাড়ি এলাকা হতে আমার মেশিন চুরি ও তার কাটার সময় আমি পারভেজ মিয়ার ২ কর্মীকে হাতেনাতে আটক করে পুলিশকে খবর দেই।
ডিশ ব্যবসা নিয়ন্ত্রণকে কেন্দ্র করে সরকার দলীয় দুই পক্ষের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটলেও তা এখনই থেমে যাবে বলে মনে করছেন না এলাকাবাসী। ডিশ ব্যবসাকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে দুই পক্ষই বেশ তৎপর। যেকোন সময় রক্তাক্ষয়ী সংঘর্ষের আশঙ্কা ছিল এলাকাবাসীর। সেই আশংকাকে নিরশন করলেন দলের নেতারা।