প্রায় ৪ বছর আগে সৌদি আরবে পাড়ি জমিয়েছিলেন রাজেম মণ্ডল (২৮)। সেখানে গিয়ে একটি প্লাস্টিক কারখানায় কাজ করে ভালই উপার্জন করছিলেন তিনি। স্বপ্ন দেখছিলেন সুন্দর ভবিষ্যতের। কিন্তু তার মৃত্যুতে মলিন হয়ে যায় রাজেম মণ্ডলের স্ত্রী ও বৃদ্ধ বাবা-মায়ের সুখের স্বপ্ন। পাবনার চাটমোহর উপজেলার মূলগ্রাম ইউনিয়নের খতবাড়ি পুরাতন পাড়া গ্রামের ইউসুফ মণ্ডলের ছেলে রাজেম। হঠাৎ অসুস্থ হয়ে গত বুধবার সৌদি আরবের রিয়াদে স্থানীয় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃ’ত্যু হয়। মঙ্গলবার রাতে তিনি বুকে প্রচণ্ড ব্যথা অনুভব করলে তার সহকর্মীরা তাকে হাসপাতালে ভর্তি করেন।
তার মৃত্যুর খবরে বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছেন বৃদ্ধ বাবা-মা ও স্ত্রী। মৃত রাজেমের লাশ দেশের বাড়িতে নিয়ে আসতে আড়াই লাখ টাকা লাগবে বলে জানিয়েছে সৌদিতে থাকা তাদের এক নিকট আত্মীয়।
কিন্তু পরিবারের পক্ষে এই মুহূর্তে আড়াই লাখ টাকা দিয়ে রাজেমের লাশ আনা সম্ভব নয়। নিহতের চাচা হাফিজ উদ্দিন জানান, জীবিকার সন্ধানে গত চার বছর আগে রাজেম অনেক টাকা দিয়ে সৌদির রাজধানী রিয়াদে পাড়ি জমান। সেখানে কাজ করে বেশ ভালই উপার্জন করছিল সে। গ্রামের বাড়িতে প্রতি মাসেই টাকা পাঠাতেন। তবে করোনার কারণে গত কয়েক মাস সে বাড়িতে টাকা পাঠায়নি।
কথা বলার সময় বাড়িতে সে জানায় তার শরীর ভাল লাগছে না। তার পর শুনেছি রাতেই সে অসুস্থ হয়ে পড়লে সহকর্মীরা তাকে হাসপাতালে ভর্তি করে। সকালে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। এমন পরিস্থিতিতে তার লাশ এখন দেশে আনতে শুনছি আড়াই লাখ টাকা লাগবে। এতো টাকা তো এই পরিবার কোনোভাবেই দিতে পারবে না।
চাটমোহর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সৈকত ইসলাম বলেন, একজন প্রবাসী মারা গেছেন। এটা অত্যন্ত দুঃখের একটি সংবাদ। তার মরদেহ দেশে আনতে কেন টাকা প্রয়োজন হবে বিষয়টি আমার বোধগম্য নয়। আমি জেলা সদরে অবস্থিত প্রবাসী কল্যাণ অধিদপ্তরে যোগাযোগ করবো বিষয়টি নিয়ে। এছাড়া উপজেলা পরিষদ পরিবারটির পাশে থেকে সাধ্য অনুযায়ী প্রয়োজনীয় সাহায্য সহযোগিতা করা হবে।
সংসারে সে একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি ছিলেন। অনেক টাকা ধারদেনা করে বিদেশ যাওয়ায় এখনো তার ঋণের টাকা পরিশোধ হয়নি। তিনি আরও জানান, গত মঙ্গলবার রাতেও সে বাড়িতে কথা বলেছে।