মঙ্গলবার, ৩০শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১৭ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
আজ মঙ্গলবার | ৩০শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
Home » Slider »

নারায়ণগঞ্জে করোনাকাল চিনিয়েছে আমরা কতটুকু স্বার্থপর: শামীম ওসমান

মঙ্গলবার, ১২ জানুয়ারি ২০২১ | ৬:১৩ অপরাহ্ণ

নারায়ণগঞ্জে করোনাকাল চিনিয়েছে আমরা কতটুকু স্বার্থপর: শামীম ওসমান

পৃথীবির অনেকেই যখন নিজেকে খোদা ভাবতে শুরু করেন। তখন এই ধরণের রোগের (করোনার) আবির্ভাব হয়। বিভিন্ন গণমাধ্যম সূত্রে জানতে পেরেছি, টিকা দিলেই যে, কেউ ভালো থাকবে এমনটা নয়। যারা টিকা নিয়েছেন কিংবা নেয় নাই, তাদেরকেও একই ভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। কারণ আমরা এখন করোনার টিকা নিলে কি হবে, তা জানিনা। নারায়ণগঞ্জে করোনা মোকাবেলা করাটা আমাদের দায়িত্ব ছিল। যে দায়িত্বে অবহেলা করবে তার তো বদনাম হওয়াটাই উচিৎ।
করোনার অ্যান্টিজেন পরীক্ষা কার্যক্রমের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য একেএম শামীম ওসমান। মঙ্গলবার (১২ জানুয়ারি) দুপুরে নগরীর খানপুর এলাকায় অবস্থিত নারায়ণগঞ্জ ৩শ’ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতাল প্রাঙ্গণে উক্ত অনুষ্ঠানটির আয়োজন করা হয়।

এ সময় শামীম ওসমান আরও বলেন, ‘করোনাকালে নারায়ণগঞ্জের জনপ্রতিনিধিরা তাদের যথাযথ দায়িত্ব পালন করেছেন। তবে এই দায়িত্বের বাহিরেও কিছু লোক স্বেচ্ছায় দায়িত্ব পালন করেছেন। যারা এই দায়িত্ব পালন করেছেন, আমি তাদের নামটা বলতে চাই।’

তিনি বলেন, ‘এই করোনাকালে আমাদের শিক্ষা হয়েছে কি না, আমরা জানি না। কিন্তু এই নারায়ণগঞ্জের অনেক ঘটনা আমরা সাংবাদিকদের মাধ্যমে জানতে পেরেছি যে, সেসময় কোথাও বাবার লাশ পড়ে আছে কিন্তু সন্তান সেই লাশ ধরছেনা। আবার দেওভোগ বাবুরাইলে এক গিটারিস্টের লাশ রাতভর রাস্তায় পড়েছিল। কিন্তু কেউ না ধরায় পরদিন সেই লাশ দাফন করা হয়েছিল। শুধু তাই নয়, আমি একটি এলাকার নাম বলবো না। যে এলাকায় একজন বাবার লাশ পড়েছিল, যখন লাশ উদ্ধারের জন্য স্বেচ্ছাসেবীরা সেই ঘরে প্রবেশ করতে যাচ্ছিলেন তখন ওই পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা তাদের দেখে পাশের রুমে ঢুকে গিয়েছিলেন। যারা লাশটি উদ্ধার বা আনতে গিয়েছিলেন, তাদের দেখে মৃতের পরিবারের কেউ নিচে নেমে আসেনি। উপরন্তু লাশ উদ্ধারকারীদের উপর থেকে বলেছিলেন, “ওই যে লাশ পড়ে আছে, নিয়ে যান, নিয়ে যান”। তখন ওই পরিবারের সদস্যরা বলছেন, ভাই লাশটি যে তোষকটি দিয়ে মোড়ানো ছিল, সেই তোষকটিও আপনারা নিয়ে যান। এটিকে আগুনে পুড়িয়ে দিয়েন। দিস ইস দ্যা রিয়েলিটি। মুসলমানদের ভাষায় এটার নাম হলো ইয়ানফসি।’

তিনি আরও বলেন, ‘এই ইয়ানফসির দুনিয়া আমাদের বুঝিয়ে দিয়েছেন, আমরা কতটুকু অপারগ, কতটুকু স্বার্থপর।’

করোনাকালে নিজের প্রাপ্ত অভিজ্ঞতার আলোকে শামীম ওসমান বলেন, “এই দৃশ্যের বাহিরে আরও একটি দৃশ্য দেখেছি। সেই দৃশ্যটা, নারায়ণগঞ্জের জন্য আমি যে কিছু কাজ করতে পেরেছি আল্লাহর হুকুমে এবং মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর উছিলায়, সেইটার মূলে যদি সাপোর্টিং রোলস্ হিসেবে কেউ থেকে থাকে এইবার, তাহলে সেটা হলো সাংবাদিকরা। এই প্রশ্নে সাংবাদিকরা এইবার যে ভূমিকা রেখেছেন, এই জন্য আমি তাদের স্যালুট করি। কারণ, তখন সব জায়গায় বিভ্রান্তকর তথ্য বেশি ছড়াচ্ছিল। তাই আমরা জানার চেষ্টা করছিলাম যে, জনগণ এখানে সঠিক সেবা পাচ্ছে কিনা? কেননা, করোনার জন্য তখন কেউ ঘর থেকে সহসাই বাহিরে বের হয় নাই। তারপরেও মানুষের ঘরে খাবার পৌঁছে দেওয়া এমনকি হাসপাতালের ভিতরে ঢুকে সাংবাদিকরা তাদের পরিচয় গোপন রাইখা, হাসপাতালের করোনা রোগীদের সেবার পরিস্থিতি দেখে ভিডিও করে আমাকে পাঠিয়ে ছিল, ‘দিস ইস হ্যাপেন’। আজকে আমি সেই সব সাংবাদিকদের ধন্যবাদ জানাতে চাই।”

উন্নয়ণ প্রসঙ্গে শামীম ওসমান আরও বলেন, ‘ঢাকার পাশে প্রাচ্যের ডান্ডি লিংক রোডে বঙ্গবন্ধুর নামে বিশ্ববিদ্যালয় নির্মিত হলে নারায়ণগঞ্জবাসীর উপকারই হবে। এছাড়াও লিংক রোড, ডিএনডি প্রকল্পের উন্নয়ণ সহ নানা কাজ করা হয়েছে। আজকে এখানে কিছু লোকের নাম না বললেই নয়, যেমন-স্বাস্থ্যের সাবেক ডিজি, প্রধাণমন্ত্রীর কার্যালয়ের মূখ্য সচিব কায়কাউস, এসএসএফের ঊর্ধতন কর্মকর্তাসহ আরও কয়েকজন আছেন যারা এই হাসপাতালটিতে করোনাকালে আইসিইউ স্থাপনার জন্য ৪৮ ঘন্টার মধ্যে আমার অনুরোধে ব্যবস্থা নিয়েছিলেন। আমি তাদের প্রতি ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।’ নারায়ণগঞ্জ ৩শ’ শয্যা হাসপাতালের সুপার ডা. আবুল বাশারের সভাপতিত্বে ও আবাসিক চিকিৎসক ডা. সামসুদ্দোহা সঞ্জয়ের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন, অতিরিক্ত জেলা পুলিশ সুপার (সদর) সুবাস চন্দ্র সাহা, নারায়ণগঞ্জ ক্লাবের সভাপতি তানভীর আহমেদ টিটু, বাংলাদেশ মেডিকেল এসোসিয়েশনের (বিএমএ) জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক ডা. দেবাশীষ সাহা, জেলা স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের (স্বাচিব) জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক ডা. বিধান চন্দ্র পোদ্দার প্রমুখ।আলোচনা সভার পূর্বে করোনার অ্যান্টিজেন পরীক্ষা কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন সাংসদ শামীম ওসমান। যার রিপোর্ট ১৫ থেকে ৩০ মিনিটের মধ্যেই পেয়ে যাবেন পরীক্ষা করতে আসা রোগীরা। সভাশেষে সর্বপ্রথম শামীম ওসমান নিজের করোনা অ্যান্টিজেন পরীক্ষা করান।




সর্বশেষ  
জনপ্রিয়  

ফেসবুকে যুক্ত থাকুন